পাকিস্তানকে ‘পুরোপুরি একঘরে’ করার হুমকি ভারতের

কাশ্মিরের পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মোদি সরকারের জরুরি বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে পুরোপুরি একঘরে করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে দিল্লি। পাকিস্তানকে ভারতের দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।

পুলওয়ামার হামলাস্থল
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর প্রায় ২৫০০ সদস্যকে নিয়ে ৭০টি গাড়ির একটি বহর জম্মু থেকে কাশ্মির যাচ্ছিলো। এরমধ্যে ৪৪ জন জওয়ানকে বহনকারী একটি বাসের ওপর আত্মঘাতী হামলা চালায় জয়েশ-ই-মোহাম্মদ সদস্যরা। প্রায় সাড়ে তিনশ’ কেজি বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি নিয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেওয়া হয়। এতে ৪০ জনেরও বেশি জওয়ান নিহত হয়। আহত হয় আরও অনেকে। হামলার পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-এ-মোহাম্মদ। গোষ্ঠীটি কাশ্মিরে ভারতীয় শাসনের অবসান চায়। মতাদর্শগতভাবে কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে অবস্থান তাদের।

কাশ্মিরের হামলা নিয়ে শুক্রবার সকালে নয়াদিল্লিতে জরুরি বৈঠকে বসে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ অন্য শীর্ষ মন্ত্রীরা বৈঠকে অংশ নেন। মোদি হুঁশিয়ার করেন, যারা এ হামলা চালিয়েছে তারা ‘মহা ভুল’ করেছে এবং এর জন্য ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে তাদের। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানান, পাকিস্তানকে ‘পুরোপুরি একঘরে’ করে দিতে সম্ভাব্য সব কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।
জেটলি বলেন, ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেবে সরকার। কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা হামলা চালিয়েছে এবং যারা এই হামলায় মদত দিয়েছে, তাদের চরম মূল্য দিতে হবে।’
পাকিস্তানের গায়ে ভারতের ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর তকমা রয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো নিজেদের মধ্যে ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’ চুক্তি স্বাক্ষর করে থাকে। এর ফলে ওই জোটের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি দেশ পরস্পরকে আর্থিক সাহায্য করে থাকে। ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে দেওয়া সেই তকমা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানান অরুণ জেটলি।