নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে কাশ্মিরের পাকিস্তান অংশে ভারতের বিমান হামলা

নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে কাশ্মিরের পাকিস্তান অংশে হামলা চালিয়েছে ভারত। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে এ হামলা চালানো হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, হামলায় পাকিস্তানের ‘জঙ্গি ঘাঁটি’ লক্ষ্য করে এক হাজার কেজি বোমা বর্ষণ করা হয়েছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও ভারতের এই অভিযানের কথা স্বীকার করা হয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে মুজাফফরাবাদ সেক্টরে অনুপ্রবেশ করেছে ভারতীয় বাহিনী। তবে পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর ত্বরিত পদক্ষেপে ভারতীয় বাহিনী পালিয়ে যায়। এতে পাকিস্তানের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

12

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পাক বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে ভারতের অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। ভারতের একটি যুদ্ধবিমানও ভেঙে পড়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়েছে, ১২টি যুদ্ধবিমান এই অভিযানে অংশ নেয়। এতে এক হাজার কেজি বোমা ফেলে সন্ত্রাসী ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযান শতভাগ সফল হয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে জয়েশ-ই-মুহম্মদের কন্ট্রোল রুম সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোর ৩টা ৪৮ থেকে ৩টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত মুজফ্ফরাবাদে হামলা চালানো হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে চকোটি ও বালাকোটে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব অভিযানে জঙ্গিদের তিনটি ক্যাম্প ধ্বংস করে দেয় ভারতীয় বাহিনী।
ভারতের মেজর জেনারেল একে সিভাচ এনডিটিভি’কে বলেন, অভিযান পুরোপুরি সফল হয়েছে। তবে নিজের সুরক্ষার প্রশ্নে ভারতকে এখন আরও সচেতন থাকতে হবে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ভারতের ‘সেন্ট্রাল রিজার্ভ ফোর্সের’ গাড়িবহরে চালানো আত্মঘাতী হামলায় বহরের অন্তত ৪০ সদস্য নিহত হয়। পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জয়েশ-ই-মুহম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়। ভারতের তরফ থেকেও হামলার জন্য ওই গোষ্ঠীকে দায়ী করা হয়। একইসঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তোলে দিল্লি। এ নিয়ে দুই দেশের তীব্র বাকযুদ্ধের মধ্যেই এ বিমান হামলার ঘটনা ঘটলো।
এদিকে অবিলম্বে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে কাশ্মির ত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছে কাশ্মিরের স্বাধীনতার দাবি লড়াইরত সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন। সংগঠনের শীর্ষ নেতা রিয়াজ নাইকু হুমকি দিয়েছেন, সেনারা কাশ্মির না ছাড়লে তাদের কফিন মিছিলও থামবে না। এক অডিও বার্তায় ভারতের উদ্দেশে নাইকু বলেন, কাশ্মির না ছাড়লে পুলওয়ামার ঘটনার মতো নতুন নতুন ঘটনায় ভারতকে ‘কাঁদতে’ হবে। সূত্র: এনডিটিভি, এএনআই, রয়টার্স।