নিউমোনিয়ায় প্রাণ হারিয়েছে শামীমার সদ্যোজাত সন্তান

পৃথিবীর রূপ-রস-স্বাদ-গন্ধ অনুভব করার আগেই পৃথিবী ছাড়তে হলো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামিমা বেগমের সদ্যোজাত সন্তান জেরাহকে।  জিহাদি উন্মত্ততায় সিরিয়ায় পাড়ি জমানোর কারণে সম্প্রতি ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারিয়েছেন শামিমা। তার আইনজীবী গতকাল শুক্রবারই জেরাহ'র মৃত্যুর খবর দেন। তবে তিনি নিশ্চিত কোনও সূত্র উল্লেখ করে পারেননি। তবে শনিবার সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের একজন মুখপাত্র তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন। জেরাহ নিউমোনিয়ায় প্রাণ হারিয়েছে বলে জানা গেছে।

noname
আইএস-এর জিহাদি উন্মাদনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় গিয়েছিল শামীমা। জঙ্গি বিয়ে করে জিহাদি সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য যে প্রচারণা চালিয়েছিল আইএস, শামীমা তারই বলি হয়েছিল। নেদারল্যান্ডস থেকে  সিরিয়ায় যাওয়া এক জঙ্গিকে বিয়ে করেছিল শামীমা। দুইবার গর্ভপাতের শিকার হওয়ার পর সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় সে। ১৭ ফেব্রুয়ারি শামীমার ছেলের জন্মের কথা জানানো হয়। পরে পুত্রসন্তানের নাম রাখা হয় জেরাহ। 

১৯ ফেব্রুয়ারি শামীমার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর করে যুক্তরাজ্য সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ দেশটির পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটিকে তখনই বলেছিলেন, শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল হলেও আইন অনুযায়ী তার সন্তান জেরাহ যুক্তরাজ্যের নাগরিক। জেরাহকে যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। তবে ফেরা হলো না জেরার। শামীমার আইনজীবী মোহাম্মদ আকুঞ্জি শুক্রবারই বলেছিলেন, ‘আমাদের কাছে দৃঢ় কিন্তু অনিশ্চিত খবর আছে যে শামীমা বেগমের ছেলে মারা গেছে।’

এসডিএফ জেরাহর মৃত্যু নিশ্চিত করার পর যুক্তরাজ্য সরকারের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন ‘করুণ আর পরিবারের জন্য গভীর বেদনাদায়ক।’ তিনি জানিয়েছেন, জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিদেশে গমন ঠেকাতে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ জোরালো করবেন।

২০১৫ সালে আইএসে যোগ দিতে বাসা থেকে পালিয়ে সিরিয়া চলে যান শামীমা। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। সিরিয়া গিয়ে তিনি আইএস জঙ্গি ইয়াগো রিডিজককে বিয়ে করেন। আইএসের তথাকথিত খিলাফত ভেঙে পড়লে শামীমা তার সন্তানসহ সিরিয়ার আল হোল শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন। কিন্তু শিবিরে বসবাসরত অপরাপর জঙ্গি ও তাদের স্ত্রীদের হুমকিতে তার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। আইএস নিয়ে তার ধারণার পরিবর্তন আর যুক্তরাজ্যে ফেরার আকুতি শিবিরে বসবাসকারী অন্যদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। ধারাবাহিক হত্যার হুমকির এক পর্যায়ে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।