অ্যাসাঞ্জের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ, দেখা করবেন বিশেষ দূত

ইকুয়েডরের দূতাবাস থেকে বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে তাড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। উইকিলিকসের টুইটার পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ইকুয়েডরের এক শীর্ষ কর্মকর্তার সূত্রে তারা জানতে সক্ষম হয়েছে যে লন্ডনে সে দেশের দূতাবাস থেকে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে ‘যে কোনো সময় বের করে দেওয়া হবে’। সংস্থাটির স্বাধীন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ নিলস মেলজার মনে করছেন, অ্যাসাঞ্জ দূতাবাসের বাইরে এলেই যুক্তরাজ্য তাকে আটক করে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিতে পারে। জাতিসংঘের নিপীড়ন বিষয়ক ওই বিশেষ দূত আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এতে ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হতে পারেন বিকল্প সাংবাদিকতার উদাহরণ সৃষ্টিকারী এই অ্যাকটিভিস্ট। এদিকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংক্রান্ত জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ জোয়ে ক্যানাসাটি এ মাসেই অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জাতিসংঘ কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

অ্যাসাঞ্জ

২০১২ সালের জুন থেকে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ২০১৮ সালের জুনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, সে দেশের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয়ের সুরক্ষার অবসান ঘটাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। উইকিলিকস একইরকমের অভিযোগ করে আসছে। বৃহস্পতিবার তারা এক টুইটার পোস্টে দাবি করে “ইকুয়েডরের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা উইকিলিকসকে বলেছেন, আইএনএ পেপারস অফশোর স্ক্যান্ডালকে অজুহাত বানিয়ে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যে কোনো সময় দূতাবাস থেকে বের করে দেওয়া হবে।”

‘আমার ধারণা অ্যাসাঞ্জকে ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে বের করে দেওয়া হলে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেবে। তেমনটা হলে তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সুবিচার পাওয়ার অধিকারসহ ভয়াবহ মানবাধিকার হরণের শিকার হতে পারেন তিনি। পড়তে পারেন অমানবিক, নৃশংস ও ভয়াবহ শাস্তির কবলে।’ মানবাধিকার সুরক্ষার পূর্ণাঙ্গ নিশ্চয়তা পাওয়ার আগে অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয় অব্যাহত রাখতে ইকুয়েডরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অ্যাসাঞ্জের নিজেরও আশঙ্কা, তিনি সুইডেনে গেলে সুইডিশ সরকার তাকে গ্রেফতার করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে প্রত্যর্পণ করবে। আর যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বিচারের নামে মৃত্যুদণ্ড দেবে। তাকে দূতাবাস থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কার কথা জানানোর পর উইকিলিকস তাদের ইমেইল বিবৃতিতে বলেছে, ‘বিদেশে নিজের দুর্নীতির কেলেঙ্কারি ঢাকতে যদি প্রেসিডেন্ট মোরেনো একজন শরণার্থী প্রকাশকের সঙ্গে করা চুক্তি অবৈধভাবে বাতিল করে তবে ইতিহাস তাকে ক্ষমা করবে না।’

এদিকে জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংক্রান্ত জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ জোয়ে ক্যানাসাটি ২৫ এপ্রিল অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইকুয়েডরের মধ্যস্থতায় তাদের লন্ডন দূতাবাসে ক্যানাসাটি অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে কথা বলবেন।