‘শিগগিরই আসছি’, বাংলাদেশকে আইএস-এর হুমকি?

জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। আইএসপন্থী একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত বাংলায় লেখা একটি পোস্টারের সূত্রে এই হামলা পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। পোস্টারে বাংলায় লেখা হয়েছে ’শিগগিরই আসছি’। শ্রীলঙ্কার একাধিক গীর্জা ও হোটেলে ভয়াবহ হামলার কয়েকদিনের মাথায় এই কথিত হুমকির খবর সামনে এলো। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় গোয়েন্দারা আইএসপন্থী একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত ওই পোস্টারটি খতিয়ে দেখছে।  

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, পোস্টারে 'শিগগির আসছি ইনশাল্লাহ' লেখার পাশাপাশি আল মুসারাত নামে একটি গ্রুপের লোগো সংযুক্ত রয়েছে। সেখান থেকেই তারা ধারণা করছে, এটি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে হামলার ইঙ্গিত। প্রতিবেদনে ওই পোস্টারের কোনও ছবি যুক্ত করা হয়নি। গোয়েন্দা সূত্র বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বলে দাবি তাদের। 

টাইমস অব ইন্ডিয়া বিশ্লেষক ও গোয়েন্দা সূত্রে দাবি করেছে, আইএসের কেন্দ্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত স্থানীয় জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীনের (নব্য জেএমবি) মাধ্যমে বাংলাদেশে অবস্থান জোরালো করেছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি। জেএমবি কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ এবং প্রতিবেশি কয়েকটি রাজ্যে সদস্য নিয়োগ ও আস্তানা তৈরি করেছে। শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের পর এই পোস্টার প্রকাশকে গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের।
২১ এপ্রিল সকালে শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডের অনুষ্ঠানে ৩টি গির্জা ও ৩টি পাঁচ তারকা হোটেলে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় নিহত হয় ২৫৩ জন। এ ঘটনায় আহত হন ৫শ’রও বেশি।  হামলার পর ইসলামিক স্টেট (আইএস) একটি ভিডিও প্রকাশ করে তার দায় স্বীকার করে। ওই ভিডিওতে হামলায় অংশ নেওয়া সাত জনসহ জাহরান হাশিমকে আইসের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে দেখা যায়। তবে ভিডিওতে একমাত্র জাহরান হাশিম ছাড়া অন্যদের মুখ ঢাকা ছিল। তাদেরকে সেদিনের আত্মঘাতী হামলাকারী বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনার কয়েকদিনের মাথায় বাংলাদেশে হামলা-পরিকল্পনার খবর সামনে আনলো ভারতীয় গোয়েন্দারা। 
পৌনে ৩ বছর আগে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর তার দায় স্বীকার করে বার্তা প্রকাশ করেছিল আইএস। যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তা নাকচ করে দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১ জুলাই সংঘটিত ওই হামলায় ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে হত্যা করে। আর অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। পরেরদিন ভোরে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে বাকি জিম্মি উদ্ধার করা হয়। তবে হামলায় জড়িত পাঁচ জঙ্গি এবং ওই রেস্তোরাঁ কর্মী সাইফুল ইসলাম চৌকিদার নিহত হয়।