মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করছে যুক্তরাষ্ট্র

মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির সফরের পর মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় হোয়াইট হাউস।

_106655593_gettyimages-686179824

২০১৩ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির ক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশটিতে নির্বাসনে রয়েছে সবচেয়ে পুরাতন ও প্রভাবশালী ইসলামি সংগঠন দ্য মুসলিম ব্রাদারহুড।  মধ্যপ্রাচ্যে তাদের ১০ লাখেরও বেশি সদস্য রয়েছে।

গোষ্ঠীটেকে তাদেরকে সন্ত্রাসী চিহ্নিত করা হলে তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে।   মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, মিসরীয় প্রেসিডেন্টের অনুরোধের প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। 

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, প্রেসিডেন্ট তার জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন। অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ায় এই কার্যক্রম চলছে। 

৯ এপ্রিল সিসির সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প প্রশাসন নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন যে ব্রাদারহুডকে কিভাবে নিষিদ্ধ করা যায়। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর দলটির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়ে যাবে।

এদিকে নিজেদের ওয়েবসাইটে মুসলিম ব্রাদারহুড জানিয়েছে, হোয়াইট হাউস যেই সিদ্ধান্তই নিক না কেন তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা যা বিশ্বাস করি সেটা নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদর কাজ করে যাবো।    

যুক্তরাষ্ট্রের এমন পরিকল্পনায় তৈরি হয়েছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক জন বোল্টন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এই পরিকল্পনায় সমর্থন জানালেও সরকারি আইনজীবী ও কূটনীতিকরা আইনী প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করেছেন।

একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে দেশের বাইরেও। তুরস্কের ক্ষমতাসীন একে পার্টির এক মুখপাত্র বলেন, এই সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যহত করবে এবং অন্যান্য জঙ্গি সংগঠন শক্তিশালী হয়ে যাবে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক দ্য ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ফেলো শাদি হামিদ বলেন, এই সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। মুসলিম ব্রাদারহুড সন্ত্রাসী সংগঠন নয়। মুসলিম ব্রাদারহুড বিষয়ক কোনও মার্কিন বিশেষজ্ঞই তা বলতে পারবেন না।

এর আগে গত মাসে ইরানের সামরিক বাহিনীর বিশেষ শাখা বিপ্লবী গার্ড কর্পস আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র।   

২০১২ সালের ৩০ জুন মিসরের নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের মাথায় ২০১৩ সালের ৩ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন মোহাম্মদ মুরসি। ক্ষমতায় আসেন সেনাপ্রধান জেনারেল সিসি। সেনাবাহিনীর ওই অভ্যুত্থানে সমর্থন দেয় ইসরায়েল, সৌদি আরব ও আরব আমিরাত। সামরিক অভ্যুত্থানকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় অন্তত ৪৭ জন বিচারককে। সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের ঘটনায় ব্রাদারহুড নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ বিক্ষোভ’ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনে কর্তৃপক্ষ।