ভারতে ভিন্ন বর্ণের ছেলেকে বিয়ে করায় অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা

ভারতে ভিন্ন বর্ণের ছেলেকে বিয়ে করায় মেয়েকে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মেরেছে তার পরিবার। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার (৫ মে) রুক্মিনি নামের ওই তরুণীর মৃত্যু হয়। দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। তার স্বামী মঙ্গেশও দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। মহারাষ্ট্রের আহমদনগর শহর থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে পারনার থানার অন্তর্গত নিঘোজ গ্রামে এ ঘটনা সংঘটিত হয়। এরইমধ্যে পুলিশ ওই তরুণীর দুই কাকা সুরেন্দ্র ভারতি ও ঘনশ্যাম ভারতিকে গ্রেফতার করেছে। তার বাবা রাম ভারতি এখনও পলাতক।

মঙ্গেশ ও রুক্মিনি
রুক্মিনি রানসিংহ ও মঙ্গেশ রানসিংহ পরিবারের অমতে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু ‘নিম্নবর্ণ’র ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে মেনে নিতে পারেনি পরিবার। গত ৩০ এপ্রিল রাতে পারিবারিক একটি বিষয় নিয়ে রুক্মিনি ও মঙ্গেশের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এরপর রাগ করে বাপের বাড়ি চলে আসেন রুক্মিনি। দু’দিন পর রাগ ভেঙে যাওয়ায় মঙ্গেশকে বাপের বাড়ি থেকে তাকে নিয়ে যেতে বলেন তিনি। গত রবিবার স্ত্রীকে আনতে তার বাড়ি নিঘোজ গ্রামে যায় মঙ্গেশ। 

সেখানে যাওয়ার পর রুক্মিনির পরিবারের সদস্যরা তাকে মঙ্গেশের সঙ্গে যেতে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। শুরু হয় উত্তপ্ত বাদানুবাদ। সে সময় রুক্মিনির দুই কাকা তাদেরকে একটি কক্ষের ভেতরে নিয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। আর রুক্মিনির বাবা বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন।

দগ্ধ অবস্থায় ওই যুগলকে নিয়ে যাওয়া হয় পুনের স্যাসুন জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে রবিবার রাতেই মারা যান রুক্মিনি। তার দেহের ৭০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তিনি দু’মাসের গর্ভবতী ছিলেন বলেও জানিয়েছেন তারা। অন্যদিকে দেহের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ পুড়ে গিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মঙ্গেশ।
পারনার থানার সাব ইন্সপেক্টর বিজয়কুমার বোরগদে জানান, রুক্মিনির পরিবার পাসি সম্প্রদায়ের। অন্যদিকে পেশায় রাজমিস্ত্রি মঙ্গেশ ছিলেন লোহার সম্প্রদায়ের। প্রেমের সম্পর্ককে পরিণতি দিতে গত বছর দিওয়ালির সময় পুনেতে গিয়ে বিয়ে করেন তারা। সেই বিয়েতে অবশ্য মঙ্গেশের পরিবারের সায় ছিল। আর রুক্মিনির পরিবারের তরফে উপস্থিত ছিলেন কেবল তার মা।