ধর্ম অবমাননার অভিযোগ থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত পাকিস্তানি খ্রিস্টান নাগরিক আসিয়া বিবি দেশ ছেড়েছেন। দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের এক সূত্র দ্য ডনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আসিয়া বিবি দেশ ছেড়েছেন। তিনি একজন স্বাধীন মানুষ এবং তার নিজস্ব ইচ্ছাতেই তিনি চলে গেছেন।
তবে তিনি কোথায় যাচ্ছেন সেই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি। ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ এখনও তার ওপর নজরদারি করছে এবং নিরাপত্তার খাতিরে তার অবস্থান সম্পর্কে সচেতন রয়েছে।
এর আগে গত মাসে কানাডা পৌঁছেছেন তার মেয়েরা। এছাড়া আসিয়াকে সহায়তা করে মৃত্যুর হুমকি পেয়ে শুক্রবার পাকিস্তান ছেড়েছেন তার বন্ধু আমান উল্লাহ। ইউরোপীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে আসিয়ার যোগাযোগে মধ্যস্ততাকারী ছিলেন তিনি। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভ্যালে দাবি করেছে, কানাডার উদ্দেশ্যেই রওনা দিয়েছেন আসিয়া। তার এক পরিবারের সদস্য ডয়চে ভ্যালেকে জানান, ‘আসিয়া এখনও কানাডা পৌঁছাননি৷ তার মেয়েরা ক্যালগেরিতে মায়ের পৌঁছার জন্য অপেক্ষা করছে৷ কানাডার কর্তৃপক্ষ এই পরিবারকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রাখবে এবং আসিয়া গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন না।’
উল্লেখ্য, মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনকে ব্যবহার করা হয়। পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ধর্ম অবমাননার অভিযোগগুলো উঠলেই এমন আবেগ দেখা যায় যে, কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করে অভিযোগ ভুল প্রমাণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। সংশ্লিষ্ট আইনটিতে ধর্ম অবমাননার সংজ্ঞাই স্পষ্ট নয়। তাছাড়া অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ হাজির করাও মুশকিল। কারণ, সেরকম ক্ষেত্রে নতুন করে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠতে পারে। পাকিস্তানে অনেক মানুষ ধর্ম অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। চরম ডানপন্থী পাকিস্তানি রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক (টিএলপি) দীর্ঘদিন ধরেই ব্লাসফেমি আইনের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছে। তাদের নির্বাচনি প্রচারণার মূল বিষয় হচ্ছে ধর্ম অবমাননার শাস্তি নিশ্চিতে সর্বোচ্চ কঠোর হওয়া।