অ্যাসাঞ্জের মামলা পুনঃতদন্তের ঘোষণা সুইডেনের

সাড়া জাগানো বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলার পুনঃতদন্ত শুরু করেছে সুইডেন। বাদীপক্ষের আইনজীবীর অনুরোধে এ পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যের ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয়ে থাকায় এতোদিন মামলাটি নিয়ে অগ্রসর হতে পারেনি সুইডিশ কর্তৃপক্ষ। তবে গত এপ্রিলে ইকুয়েডর কর্তৃপক্ষ লন্ডনে পুলিশ ডেকে অ্যাসাঞ্জকে ধরিয়ে দেওয়ার পর পুরনো ওই ধর্ষণ মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়টি সামনে আসে।

যৌন হয়রানির দুই অভিযোগে ২০১০ সালের ২০ আগস্ট সুইডেন অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে দুটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে একদিনের মাথায় প্রত্যাহার তা করে নেয়। তবে সে দেশে চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে ২০১০ সালের নভেম্বরে আবারও অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পরোয়ানা জারি করা হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে তিনি যুক্তরাজ্যের আদালতে আত্মসমর্পণের ১০ দিনের মাথায় জামিন লাভ করেন। অ্যাসাঞ্জের আইনজীবীরা আদালতে নতুন পরোয়ানাকে অবৈধ দাবি করলেও ২০১২ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যের আদালত একে বৈধ বলে রায় দেয়। রায়ের প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্য থেকে সুইডেনে বা যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা হতে পারে আশঙ্কায় জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ জামিনের শর্ত ভঙ্গ করে ২০১২ সালের জুন মাসে অ্যাসাঞ্জ ইকুয়েডর দূতাবাসে যান এবং রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। জামিন শর্ত ভঙ্গের দায়ে গত ১ মে তাকে ৫০ সপ্তাহের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সুইডেনে করা ওই মামলা প্রায় এক দশক ধরে ঝুলে ছিল। ২০১০ সালে ‍দুই সুইডিশ নারী ওই মামলা করেছিলেন। ২০১৫ সালে স্ট্যাচু অব লিমিটেশন ধারায় সেটি বাতিল হয়ে যায় এবং ২০১৭ সালে তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। সে সময় অবশ্য প্রসিকিউটর বলেছিলেন, পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে ওই মামলা আবার শুরু হতে পারে।

এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে তাকে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডর। গ্রেফতারের পর তাকে রাখা হয়েছে ‘যুক্তরাজ্যের গুয়ানতানামো বে’ নামের কুখ্যাত এক কারাগারে।

অ্যাসাঞ্জের গ্রেফতারের পর বাদীর আইনজীবী পুনরায় সেই মামলা ‍শুরুর দাবি তোলেন। তবে অ্যাসাঞ্জের আইনজীবীদের আশঙ্কা সুইডেনে গেলে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা হতে পারে।