ইরান-যুক্তরাষ্ট্র বিরোধকে কেন্দ্র করে বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা মাহাথিরের

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, এক বছর আগে আমেরিকা ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেছে। সম্প্রতি তারা পারস্য উপসাগরে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যকে একটি বৃহৎ যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের এই বিরোধকে কেন্দ্র করে নতুন করে একটি বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। শনিবার মার্কিন টিভি চ্যানেল সিএনবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

noname

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস-এর শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে তিনি সিএনবিসি-কে এ সাক্ষাৎকার দেন। এ সময় তিনি বলেন, আমি যা দেখতে পাচ্ছি তা হচ্ছে আমেরিকার পক্ষ থেকে ইরানকে উসকানি দেওয়া হচ্ছে।

মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, আমেরিকা যদি যুদ্ধে জড়ায় তাহলে ওই যুদ্ধ কেবল ইরান-আমেরিকা যুদ্ধ হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি একটি বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে। এ ধরনের পরিস্থিতি ঠেকাতে বিশ্বের সব দেশকে এগিয়ে আসতে হবে।

৯৩ বছর বয়সী মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে মালয়েশিয়াও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে মালয়েশিয়া ইরানের মতো ভালো অংশীদারের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারছে না।

তিনি বলেন, আমেরিকা অন্য দেশগুলোকেও তার আরোপিত নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে বাধ্য করছে। বড় শক্তিগুলোর এ ধরনের তৎপরতা পুরোপুরি অগণতান্ত্রিক। আগামী নির্বাচনে ট্রাম্প আবারও বিজয়ী হলে তা পুরো দুনিয়ার জন্য ক্ষতি বয়ে আনবে।

এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ট্রাম্প ইরানের ওপর সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পর সে দেশের অস্ত্রব্যবস্থার ওপর সাইবার হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, ইরানি রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী কম্পিউটারের ওপর হামলা চালিয়ে তা অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে।

পরমাণু চুক্তি নিয়ে মতানৈক্যের পর ইরানের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ বৃদ্ধির অংশ হিসেবে উগসাগরীয় এলাকায় বিমানবাহী রণতরী ও ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুদ্ধ সরঞ্জাম মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। আরব উপসাগরে সাম্প্রতিক দুটি ট্যাংকার বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে কয়েকদিন আগেই মধ্যপ্রাচ্যে আরও ১ হাজার মার্কিন সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ‘আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক’ নামের একটি ড্রোন ভূপাতিত করে ইরান।

নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর খবরে বলা হয়েছে, সৌদি আরব ও আমিরাতের তেলের ট্যাংকারে হামলার অভিযোগকে সামনে এনে এবং মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনাকে কারণ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানের সেনাবাহিনীর অস্ত্র সরঞ্জামে সাইবার হামলা চালানো হয়েছে। সূত্র: এনবিসি, রয়টার্স, পার্স টুডে।