সুদানে বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক গুলি করে চার স্কুল শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় দেশটির সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির সামরিক জান্তা। শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র উত্তেজনা ও বিক্ষোভের মধ্যে মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল বন্ধের এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরব।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থায় প্রকাশিত জান্তা সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামীকাল (বুধবার) থেকে পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়া পর্যন্ত কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখতে সব রাজ্যের গভর্নরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২৯ জুলাই রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের শিকার চার স্কুল শিক্ষার্থীর শহরটি পরিদর্শনে যান দেশটির বিক্ষোভকারীদের নেতা। এ সময় তিনি জান্তা সরকারের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত আলোচনা বাতিলের ঘোষণা দেন। মূলত তার ওই ঘোষণার পরই স্কুলগুলোর বন্ধের নির্দেশ দেয় সুদানের সৌদি-আমিরাত সমর্থিত জান্তা সরকার।
রুটি ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত ওই বিক্ষোভে আন্দোলনকারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় চার স্কুল শিক্ষার্থীসহ পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করে তারা। আহত হন আরও অনেকে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন ১৯৮৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির। জ্বালানি ও রুটির দাম বৃদ্ধির এক সরকারি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। শুধু গত ৩ জুন একদিনেই বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর রক্তক্ষয়ী অভিযানে নিহত হন ৮৭ জন। আহত হন আরও ১৬৮ জন। এছাড়া রাজধানী খার্তুমের বিভিন্ন সড়কে ঘুরে ঘুরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের সদস্যরা বেসামরিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ওমর আল বশির-কে উৎখাতে সেনাবাহিনীকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের মতো দেশগুলো। গত জুনে সুদানের জান্তা সরকারের ধরপাকড় বন্ধে সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র: দ্য নিউ আরব, দ্য গার্ডিয়ান, আফ্রিকা নিউজ।