‘ইয়েমেনে সৌদি সামরিক জোট পরাজিত হয়েছে’

ইয়েমেনে সৌদি সামরিক জোট পরাজিত হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা। সোমবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেন বিদ্রোহীদের নেতা মোহাম্মাদ আলী আল-হুথি। তিনি বলেন, ইয়েমেনে আগ্রাসন চালানোর জন্য সৌদি আরব ১৭টি দেশকে নিয়ে সামরিক জোট গঠন করলেও এখন মাত্র একটি বা দু’টি দেশ এই রক্তক্ষয়ী আগ্রাসনে রিয়াদের সঙ্গে রয়েছে।
মোহাম্মাদ আলী আল-হুথি বলেন, ‘আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে হামলার জন্য ১৭টি দেশ একজোট হয়েছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র একটি বা দু’টি দেশ এখন অবশিষ্ট রয়েছে। আমরা তাদেরকেও পরাজিত করবো।’

তিনি বলেন, ইয়েমেনের জনগণ আগ্রাসন ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।

সৌদি আগ্রাসনের প্রথম দিন থেকে কোনও ধরনের পশ্চাদপসরণ ছাড়া আগ্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য হুথি বিদ্রোহীদেরও প্রশংসা করেন তিনি।

মোহাম্মাদ আলী আল-হুথি বলেন, ‘আমরা আজ একটি বৈশ্বিক দুর্বৃত্ত চক্রের মোকাবিলা করছি যারা ইয়েমেনকে তাদের উপনিবেশে পরিণত করে এদেশের জনগণকে ক্রীতদাস বানাতে চেয়েছিল।’

২০১৪ সালে রাজধানী সানা দখলের পর সৌদি সমর্থিত ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদু রাব্বু মনসুর আল হাদিকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে হুথি বিদ্রোহীরা। তারপর থেকেই দেশের বাইরে থাকা হাদিকে ক্ষমতায় ফেরাতে ২০১৫ সালের জুনে ইয়েমেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।

সৌদি জোটের বিরুদ্ধে প্রতিঘাতের অংশ হিসেবে সৌদি আরবের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন প্রদেশে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে হুথি বিদ্রোহীরা। গত মে মাসের শেষদিকে পবিত্র নগরী মক্কা ও জেদ্দায় দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হলে তা ধ্বংস করার দাবি করে সৌদি প্রতিরক্ষা বাহিনী। প্রায় একই সময় সৌদির নাজরান বিমানবন্দরে তিন দফায় হামলা চালানোর দাবি করে হুথি বিদ্রোহীরা। সর্বশেষ চলতি আগস্টেই তারা সৌদি আরবের শাইবাহ তেলক্ষেত্রে ড্রোন হামলা চালায়। ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী বলছে, তারা সৌদি আরব, ইয়েমেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৩০০ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে টার্গেট করে হামলা অব্যাহত রাখবে।

হুথি বিদ্রোহীদের মুখপাত্র মুহাম্মাদ আবদুস সালামের দাবি, জাতিসংঘ সৌদি আরবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সানার ওপর অবরোধ তুলে নেওয়ার বিষয়ে তারা কিছুই করতে পারেনি। সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওপর অপরাধমূলক অবরোধ প্রত্যাহারে ব্যর্থ হয়েছে সৌদি সামরিক জোট। অথচ তাদের বিমানবন্দরগুলোও হুথিদের হামলার সক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। সূত্র: পার্স টুডে, আল জাজিরা।