কাশ্মিরজুড়ে রাতভর অভিযান, ধরপাকড় অব্যাহত

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে অঞ্চলটিকে দুই টুকরো করে ফেলার পর থেকেই সেখানে চলছে ভারতীয় বাহিনীর নির্বিচার ধরপাকড়। এ পর্যন্ত ঠিক কত সংখ্যক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নয় কর্মকর্তারা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ম্যাজিস্ট্রেটের বরাত দিয়ে ১৮ আগস্ট এএফপি জানিয়েছে, আটকের সংখ্যা কোনও অবস্থাতেই চার হাজারের কম নয়। সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, উপত্যকার পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, সেখানকার কারাগারগুলোতে আর বন্দি ধারণের মতো জায়গা অবশিষ্ট নেই। ফলে ভারতের অন্যান্য স্থানের কারাগারগুলোতে পাঠানো হচ্ছে ধরপাকড়ের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার রাতভর উপত্যকায় অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকেও এ অভিযানের কথা স্বীকার করা হয়েছে।noname
সোমবার রাতের অভিযানে ৩০ জনকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, গত কয়েক দিনে যেসব স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পাথর নিক্ষেপের তীব্রতা বেড়েছে; সেসব স্থানেই অভিযান চালানো হয়েছে। ওই কর্মকর্তা অবশ্য নিজের নাম প্রকাশে রাজি হননি।

কাশ্মিরের রাজনীতিবিদ শেহলা রশিদ টুইট করে জানিয়েছেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা রাতে বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে তরুণদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তার ভাষায়, ‘তারা বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করছে, খাবার ফেলে দিচ্ছে বা চালের বস্তায় তেল ঢেলে দিচ্ছে এবং শেষে বাড়ির তরুণদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি লিখেছেন, সোপিয়ানের একটি আর্মি ক্যাম্পে চারজন তরুণকে ধরে নিয়ে গিয়ে জেরা ও নির্যাতনের সময় তাদের সামনে মাইক্রোফোন ধরে রাখা হয়েছিল- যাতে তাদের চিৎকারের আওয়াজ শুনে গোটা এলাকা ভয় পায়।কাশ্মিরের শ্রীনগরে এক বিক্ষোভকারীর ওপর গাড়ি চালিয়ে দেয় নিরাপত্তা বাহিনী। ছবি: এপি। ফাইল ছবি।

এদিকে জম্মু ও কাশ্মিরে সোমবার থেকে আংশিকভাবে স্কুল খোলার কথা থাকলেও বেশিরভাগ স্কুলই এদিন খোলেনি বা খুললেও শিশুরা আসেনি। শ্রীনগর থেকে বিবিসির রিয়াজ মাসরুর এদিন জানান, ‘আজ থেকে আবার স্কুল খোলার ঘোষণা হলেও শহরে তা কার্যকর করা হয়নি।’ তিনি জানান, 'প্রথমে ঠিক হয়েছিল, ক্লাস এইট পর্যন্ত বাচ্চারা স্কুলে আসবে। পরে সেটাকে শুধু ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত বাচ্চাদের জন্য চালুর সিদ্ধান্ত হয়। তবে কারফিউ-র ভেতর বাবা-মায়েরা শেষ পর্যন্ত ছোট ছোট শিশুদের স্কুলে পাঠানোর ঝুঁকি আর নেননি।’ ফলে প্রশাসন যা-ই দাবি করুক কাশ্মিরের পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক দূরে। এরমধ্যেই শত শত তরুণকে আটক করা বা তুলে নেওয়ার খবর যথারীতি আরও আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে দিচ্ছে। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।