কাশ্মির ও আসাম পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের উদ্বেগ

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের চলমান বিধিনিষেধ ও আসাম পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের প্রধান মিশেল ব্ল্যাচেত। মানবাধিকার পরিষদের ৪২তম সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি বলেন, ভারত সরকারের সম্প্রতিক পদক্ষেপে কাশ্মিরিদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের প্রধান মিশেল ব্ল্যাচেত

গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ওই দিন থেকে কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে কাশ্মির। মোবাইল-ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে সেখানকার জনশূন্য রাস্তায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র সেনারা। সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

মিশেল ব্ল্যাচেত বলেন, কাশ্মিরে ইন্টারনেট সংযোগ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা, রাজনৈতিক নেতা ও এক্টিভিস্টদের আটক করাসহ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

মানবাধিকার পরিষদের প্রধান বলেন, ‘আমি ভারত ও পাকিস্তান সরকারকে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান রাখার আহ্বান জানাই। বিশেষ করে ভারতের প্রতি আমি আহ্বান জানাই যেন তারা কাশ্মিরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ও কারফিউ তুলে নিয়ে জনগণের মৌলিক সেবা নিশ্চিত করে।’ এছাড়া আটককৃতদের মানবাধিকার নিশ্চিতেরও আহ্বান জানান তিনি।

কাশ্মির পরিস্থিতি নিয়ে এর আগে উদ্বেগ জানিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ। তবে ভারতের দাবি, কাশ্মির ইস্যু পুরোপুরি অভ্যন্তরীণ। পাকিস্তান এই বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে তুলে ধরতে চাইলেও তার কঠোর সমালোচনা করে তারা।

মিশেল ব্ল্যাচেত বলেন, সীমান্তরেখার উভয়পাশ থেকেই মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তার কাছে তথ্য আসছে। তিনি বলেন, কাশ্মির বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ করা জরুরি।

মানবাধিকার পরিষদের শীর্ষ এই কর্তা আসামের নাগরিক তালিকা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের তাড়িয়ে দেওয়ার এই তালিকা অনেক উদ্বেগ ও দুঃশ্চিন্তার জন্ম দিয়েছে। তালিকা থেকে বাদ পড়া কাউকে যেন আটক কিংবা তাড়িয়ে দেওয়া না হয় এবং কেউ যেন রাষ্ট্রহীন না হয়ে পড়ে সেটা নিশ্চিতে ভারত সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট প্রকাশিত আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ইশতেহারে অন্যতম ইস্যু ছিল নাগরিক তালিকা চূড়ান্ত করা।