হংকংয়ে বিক্ষোভকারীদের ২০০০ গ্যাস মুখোশ পাঠালেন এক তাইওয়ানীয়

টানা ১৫ সপ্তাহে গড়িয়েছে হংকং-এর চীনবিরোধী বিক্ষোভ। ইতোমধ্যেই এ গণবিক্ষোভ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে।তাদের দমিয়ে রাখতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করছে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে তাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২ হাজার গ্যাস মুখোশ পাঠিয়েছেন অ্যালেক্স কো নামে এক  তাইওয়ানীয়।

_108848615_alex

এক সময়কার ব্রিটিশ কলোনি হংকং এখন চীনের অংশ। ‘এক দেশ, দুই নীতি’র অধীনে কিছু মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে হংকং। অঞ্চলটির নিজস্ব বিচার ও আইন ব্যবস্থা রয়েছে, যা মূল চীনের চেয়ে ভিন্ন। গত ৯ জুন থেকে সেখানে কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা, ওই বিল অনুমোদন করা হলে ভিন্নমতাবলম্বীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। লাখো মানুষের উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে এক পর্যায়ে ওই বিলকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা দেন হংকংয়ের চীনপন্থী শাসক ক্যারি ল্যাম। তবে এতে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে সেখানকার নাগরিকরা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হংকংয়ের স্বাধীনতা, বৃহত্তর গণতন্ত্র ও চীনের নিযুক্ত নির্বাহী প্রধানের পদত্যাগের দাবি।

বিক্ষোভকারীদের হয়ে প্রথম গ্যাস মুখোশ সংগ্রহের কাজটি শুরু করেন  অ্যালেক্স কো। স্বল্পভাষী এই ব্যকি্ত নিজে উপস্থিত না থাকলেও একাত্ম হয়েছেন হংকংয়ের স্বাধীনতাকামীদের আন্দোলনে। এয়ার ফিল্টার, গ্যাস মুখোশ ও হেলমেটের জন্য নিজের গির্জায় অর্থ সংগ্রহ করেন তিনি। এরপর এমন ২ হাজার সেট সংগ্রহ করে হংকংয়ে পাঠিয়ে দেন তিনি

অ্যালেক্স বলেন, আমি কখনও হংকং যাইনি। তবে আমি তাদের আক্রমণের শিকার হতে দেখি আর নিজের ওপর দায়িত্ব অনুভব করি। কারণ এরপর আমিও হামলার শিকার হতে পারি। তিনি বলেন, আমরা জীনের অংশ না। কিন্তু তারা আমাদের ওপরও আগ্রাসন চালাতে পারে। হংকংয়ের পাশে থাকলে তাইওয়ান শক্তিশালী হবে এবং একদিন হয়তো আমাদেরও তাদের সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে।

চীনের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন তাইওয়ান মূলত দক্ষিণ চীন সমূদ্রের একটি দ্বীপ। চীন মনে করে তাইওয়ান তাদের দেশেরই অংশ।  যেটি ভবিষ্যতে কোন একদিন চীনের সঙ্গে বিলুপ্ত হবে।

১৯৮০র দশক পর্যন্ত চীন আর তাইওয়ানের মধ্যে চলেছে তীব্র বাকযুদ্ধ। কিন্তু এরপর সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ‘এক দেশ, দুই পদ্ধতি’ নামে চীন এক প্রস্তাব দেয়। যেখানে তাইওয়ান মূল চীনে বিলুপ্ত হবে, কিন্তু তাদের স্বায়ত্বশাসন দেয়া হবে। কিন্তু তাইওয়ান সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। অবশ্য এর মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকেনি। তাইওয়ানের অর্থনীতি এখন চীনের ওপর এতটাই নির্ভরশীল যে জনসংখ্যার একটা বড় অংশ এখন আর স্বাধীনতাকে কোন বাস্তবসম্মত বিকল্প বলে ভাবে না।