আফগানিস্তানে কৃষি খামারে সরকারি বাহিনীর ড্রোন হামলা, নিহত ৩০

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর সহায়তায় আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীর এক অভিযানে অন্তত ৩০ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও অপর ৪০ জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন বুধবার রাতে আইএস যোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হলেও ভুলক্রমে তা নাঙ্গাহার প্রদেশের ওয়াজির টাঙ্গি এলাকার একটি খামারের কৃষকদের ওপর চালানো হয়। প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য সোহরাব কাদেরি জানিয়েছেন, ড্রোন ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়।noname

আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কয়েক মাস ধরে আলোচনার পর সম্প্রতি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানোর কথা জানায় আফগানিস্তানের শসস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। তবে চলতি মাসে ওই আলোচনাকে মৃত ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তালেবান সতর্ক করে দিয়ে বলেছে,আফগান সরকার ও বিদেশি বাহিনীর ওপর হামলা তীব্র করে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনগণকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত রাখা হবে। গত কয়েক দিনে বেশ বড় ধরনের কয়েকটি হামলার দায় স্বীকার করেছে তালেবান।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসনে আফগানিস্তানে উৎখাত হয় তালেবান সরকার। এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। গত কয়েক বছরে তালেবানের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী আইএসও আফগানিস্তানে সক্রিয় রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।

আফগানিস্তানের তিন কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, বুধবার রাতে নাঙ্গাহারে খোজিয়ানি জেলায় আইএস যোদ্ধাদের অবস্থানে অভিযান চালায় সরকারি বাহিনী। তবে ভুলক্রমে খামারের কৃষকদের ওপর বোমাবর্ষণ করা হয়। প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য সোহরাব কাদেরি জানান, পাইন নাট খামারে ড্রোন হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত ও অপর ৪০ জন আহত হয়েছে। কাবুলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা অভিযানের কথা স্বীকার করলেও তাৎক্ষনিকভাবে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেননি। প্রাদেশিক গভর্নরের মুখপাত্র আতাউল্লাহ খোজিয়ানিও বিমান হামলার কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সরকার এই ঘটনা তদন্ত করে দেখছে। এখন পর্যন্ত পাইন নাট খামারে হামলাস্থলের কাছ থেকে নয় জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী তাৎক্ষনিকভাবে এই হামলা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

ওয়াজির টাঙ্গি এলাকার বয়স্ক উপজাতি ব্যক্তি মালিক রাহাত গুল বলেন, মূলত দিনমজুরেরা ওই খামারে কাজ করতো। সারাদিনের কাজ শেষে বিশ্রামের জন্য তাঁবুর কাছে জড়ো হলে এই বিমান হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, কর্মীরা তাঁবুর পাশে আগুন জ্বালিয়ে এক সঙ্গে বসেছিল আর তখনই ড্রোন হামলা চালানো হয়।