ফিলিস্তিনিদের বৈধ অধিকারকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: রাশিয়া

রাশিয়ার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে এক তরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ অভিযোগ করেন, কথিত ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’র মধ্য দিয়ে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পথ রুদ্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এরমধ্য দিয়ে তারা ফিলিস্তিনিদের বৈধ অধিকার এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।sergey-lavrov

ঐতিহাসিকভাবেই মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ইসরায়েল-ঘেঁষা। তবে বিগত মার্কিন প্রশাসনগুলো চাইতো, দুই দেশের মধ্যকার সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান হোক। অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন বন্ধের পাশাপাশি ১৯৬৭ সালের প্রস্তাবিত সীমানা অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষেই অবস্থান ছিল তাদের। তবে ট্রাম্প সমগ্র জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী স্বীকৃতি দিয়ে সেই দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন। এদিকে সেই ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এক জাতিসংঘ প্রস্তাবে ১৯৬৭ সালের চুক্তির বাইরে এসে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নির্মিত যাবতীয় ইসরায়েলি বসতি নির্মাণকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। ল্যাভরভ অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র তার পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের সেই প্রস্তাবকে অগ্রাহ্য করছে।

নির্বাচনি প্রচারণার সময় থেকেই দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান নীতির সমালোচনা করে আসা ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরপরই নতুন শান্তি প্রস্তাব তৈরির কথা জানান। ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ নামের সেই ইসরায়েল-ঘেষা রূপরেখা এখনও জনসম্মুখে উন্মোচন করা হয়নি। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, এই চুক্তিতে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু সংকট নিরসনে দুই রাষ্ট্রের একটি সমাধান হাজির করেছেন। তবে এই দুই রাষ্ট্রের সমাধানে নেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি। 'ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি'-তে যে দুই রাষ্ট্রের প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, দখলকৃত গাজা উপত্যকা চলে যাবে মিসরের অধীনে। আর দখলকৃত পশ্চিম তীরের একাংশে থাকবে জর্ডানের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব। পশ্চিম তীরের অবশিষ্ট অংশ শাসন করবে ইসরায়েল। এখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের সার্বভৌম ইসরায়েল রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

কথিত ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’কে জেরুজালেম ও গোলান মালভূমি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা সিদ্ধান্ত আখ্যা দিয়ে ল্যাভরভ বলেন,  ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের একমাত্র পথ দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান। ট্রাম্পের কথিত শতাব্দীর সেরা চুক্তি যাবে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।