ব্রেক্সিট পেছানোর পক্ষে রায় ব্রিটিশ পার্লামেন্টের

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তি পেছানোর পক্ষে রায় দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট। শনিবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটির জন্য খসড়া চুক্তিটি উত্থাপন করা হলে এটি পেছানোর পক্ষে রায় দেন এমপিরা। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
পার্লামেন্টের এ রায়ের পর প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে বিলম্বের বিষয়ে তিনি আর কোনও আলোচনা করবেন না। তবে বিবিসি জানিয়েছে, পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়া সংশোধনীর পক্ষের এমপিরা জয়লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের জন্য ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকরের তারিখ পেছানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির অলিভার লেটউইন। ভোটাভুটিতে চুক্তির সংশোধনীর পক্ষে রায় দেন ৩২২ জন এমপি। বিপক্ষে ভোট দেন ৩০৬ জন। এর মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন ফের পিছিয়ে পড়লো। ফলে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমা পিছিয়ে দিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে ইইউ-এর কাছে চিঠি লিখতে হবে।

এদিকে পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে হেরে যাওয়ার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে কোনও চিঠি না লেখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

বরিস জনসন বলেন, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে আরও দেরি করতে ইইউ-এর সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হবে না। আইন অনুযায়ী, এটি করতে আমি বাধ্য নই। ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে আরও দেরি করা হলে তা আমাদের দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হবে। খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে আগামী মঙ্গলবার আবারও পার্লামেন্টে প্রস্তাব তোলা হবে।

উল্লেখ্য, ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়ে চলতি বছরের গত মে মাসে পদত্যাগের ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি সরে দাঁড়ানোর পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী কনজারভেটিভ নেতা বরিস জনসন। নির্বাচিত হওয়ার পর আগামী ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন তিনি। প্রয়োজনে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটেরও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন তিনি। তবে দীর্ঘ আলোচনা আর নানা নাটকীয়তার পর গত ১৭ অক্টোবর চুক্তির ব্যাপারে ইইউ-এর সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছায় বরিস জনসনের সরকার। শনিবার এ চুক্তি বা সমঝোতা পেছানোর পক্ষে রায় দেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। অর্থাৎ, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের তারিখ ফের পিছিয়ে যাচ্ছে। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।