লেবাননে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর রাজপথ খালি করছে সেনাবাহিনী

সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া লেবাননের রাজপথ খালি করতে শুরু করেছে সেনাবাহিনী। বুধবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরির পদত্যাগের একদিন পর ওই অভিযান শুরু করে তারা। এতে জনজীবন স্বাভাবিক করার জন্য বড় বড় রাস্তা খালি করতে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নির্দেশনা জারি করা হয়।

c31944dddbe74ae9bc7fefca0e25fb1f_18

২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর হোয়াটসঅ্যাপ এবং একই ধরনের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপসগুলোতে কর আরোপ প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়ে লেবাননে বিক্ষোভ শুরু করে আন্দোলনকারীরা। এই প্রতিবাদের সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ। হোয়াটসঅ্যাপে কর বাতিলের আন্দোলন পরিণত হয় তীব্র সরকারবিরোধী আন্দোলনে। জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া ও জীবনমানের অবনতির জন্য সরকারের পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভের ১৩ দিন পর মঙ্গলবার রাতে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। তবে তার পদত্যাগ এখনও গ্রহণ করেননি প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন। যার ফলে ওই রাজনৈতিক সংকট সমাধানের ব্যাপারে কোনও পরিষ্কার ধারণা নেই। এখন সাদ হারিরির পদত্যাগ গৃহীত হলে লেবাননের আইন অনুযায়ী নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান মন্ত্রিসভাই দেশ পরিচালনা করবে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দোলনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরির পদত্যাগের একদিন পর বুধবার ওই বিবৃতি দিয়েছে সেনাবাহিনী। ওই বিবৃতি প্রসঙ্গে পার্লা নামের একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘সেনাবাহিনী অনুরোধ করার পর আমরা রাস্তাগুলো খুলে দিচ্ছি। গত কয়েক দিনে তারা আমাদের সুরক্ষা ও সেবা  দিয়েছে।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি পূরণ করতে রাজনীতিবিদদের এক বা দুইদিন সময় দেওয়া দরকার। এবং আমাদের বাকি দাবিগুলোও পূরণ করা দরকার।’

আল জাজিরার বৈরুত প্রতিনিধি স্টেফানি ডেকার বলেন, ‘দেশটির মধ্যাঞ্চলের জেলা ও রাজধানীর রাজপথ খালি করতে সহায়তা করছে বিক্ষোভকারীরা।’  

ডেকার বলেন, ‘রাস্তায় শুয়ে থাকা বিক্ষোভকারী কয়েকজনের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর। এরপর তারা উঠে দাঁড়ায় ও জাতীয় সংগীত আবৃত্তি করে। এরপর তারা তাদের বক্তব্য বলে চলে যায়।’ তিনি বলেন, ‘এটা ছিল শান্তিপূর্ণ সমঝোতা। দুই সপ্তাহ ধরে এগুলোর (সমঝোতা) মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে সেনাবাহিনী। তবে কিছু কলহ হয়েছে, তারপরও সাধারণ জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে তারা তাদের রক্ষা করেছে।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য প্রেসিডেন্টকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রিসভা গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আন্দোলনকারী রায়ান আবু লতিফ বলেন, ‘আমরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চাই না। তারা আমাদের সহায়তা করেছে। আমরা যথাসম্ভব তাদের সহায়তা করবো। আশা করি খারাপ কিছু ঘটবে না।’