লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে টাকার বন্ড

লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়েছে বাংলা বন্ড নামের বাংলাদেশের প্রথম ‘টাকা ডিনমিনেটেড বন্ড’। সোমবার (১১ নভেম্বর) লন্ডন স্টক মার্কেটে স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘রিং দ্যা বেল’ নামের এক অনুষ্ঠানে বাংলা বন্ড কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। বাংলা বন্ড চালু বিশ্ব অথনীতিতে বাংলাদেশের একটি বড় পদক্ষেপ। এই বন্ড চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবাসী বিনিয়োগ আরও সহজতর হবে।

74584294_517908765426204_5441421593471352832_n

বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, বাংলা বন্ড চালুর পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান রয়েছে, এমনকি বাংলা বন্ড নামটিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া। অনুষ্ঠানে সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইএফসির এশিয়া এবং প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট নেনা ষ্টেলকোভিক, ব্রিটেনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীম ও আইএফসি ডিরেক্টরবৃন্দ।

পরে লন্ডন সময় সকাল সাড়ে ৯টায় লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ সেমিনার রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়ার জন্য লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে চালু হয়েছে ‘বাংলা টাকা বন্ড’। এটি হবে একটি টাকা বন্ড। এই বন্ডের আকার হবে ১০০ কোটি ডলার। কিন্তু প্রাথমিকভাবে বাজার থেকে তোলা হবে ১ কোটি মার্কিন ডলার বা ৮৪ কোটি টাকা। প্রবাসীরা ডলারে এই বন্ড কিনলেও প্রথমবারের মতো তা টাকায় রূপান্তর করে দেশের বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) হবে এই বন্ডের সরবরাহকারী ব্যবস্থাপক।

মন্ত্রী আরও বলেন, এই প্রথম বাংলাদেশের টাকা কোনও আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের সঙ্গে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। টাকা লন্ডন স্টক মার্কেটে লেনদেন হবে। যে কেউ এই বন্ড কিনতে পারবে। ডলার দিয়ে এই বন্ড কিনতে হবে। সেই ডলার টাকায় কনভার্ট হয়ে তা বিনিয়োগ করা হবে। আইএফসি বাংলাদেশে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করেছে। এই ১ বিলিয়ন ডলার ‘টাকা বন্ড’ ছাড়ার মাধ্যমে তাদের বিনিয়োগ আরও বাড়বে।

1825

প্রাথমিকভাবে এই বন্ডের সময়সীমা ৩ বছর মেয়াদি হলেও পরে তা বাড়িয়ে ৫ বছর এবং সর্বোচ্চ ১০ বছর করা হতে পারে।  ২০১১ সাল থেকে এ ধরনের বন্ড ছাড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ’র বার্ষিক সভায় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সাথে আইএফসি’র নেতৃবৃন্দের এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এই বন্ড ছাড়ার প্রস্তাব দিলে তখনই প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।

এরপর আইএফসি বাংলাদেশ সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠায় এবং তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অর্থ মন্ত্রণালয় একই বছর (২০১৫) ৪ অক্টোবর এক চিঠিতে ‘টাকা বন্ড’ ছাড়ার অনুমোদনের বিষয়টি জানায়। প্রবাসীদের জন্য ‘ডলার বন্ড’ থাকলেও বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো ‘টাকা বন্ড’ ছাড়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এই বন্ডের মাধ্যমে যে অর্থ উত্তোলন করা হবে তা আইএফসি অর্থায়নের পরিচালিত বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে।