অযোধ্যা মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন ভারতের ৪৮ বুদ্ধিজীবী

অযোধ্যা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় পর্যালোচনার আপিল করবেন ভারতের অন্তত ৪৮ জন অ্যাকাডেমিশিয়ান ও অ্যাকটিভিস্ট। আগামী সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে ওই আবেদন করা হবে। এতে শীর্ষ আবেদনকারী হিসেবে থাকবেন অর্থনীতিবিদ প্রভাব পাটনায়েক। আবেদনকারীদের মধ্যে থাকবেন অ্যাকটিভিস্ট ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হর্শ মন্দার। তিনি জানিয়েছেন, শীর্ষ আদালতের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির দাবিতে ৯ ডিসেম্বরের আগেই এই আপিল করা হবে। ওই আপিলের একটি কপি হাতে পেয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট।অযোধ্যার রাম মন্দিরের রেপ্লিকা

শতাব্দী প্রাচীন বিবাদের আইনি ইতি টেনে গত ৯ নভেম্বর (শনিবার) অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে,অযোধ্যার বিতর্কিত ওই ২ দশমিক ৭৭ একর জমিতে গড়ে উঠবে রাম মন্দির। আর অন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মসজিদের জন্য বরাদ্দ করা হবে ৫ একর জমি।

দ্য প্রিন্টের হাতে আসা রায় পর্যালোচনার আবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলাকে হিন্দু ও মুসলমানদের বিরোধ বলে বিবেচনা করা হয়েছে। রায়ে হিন্দু ও মুসলমানদের আবেগ ও স্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে স্বঘোষিত প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনা করা হয়েছে। যদিও ওইসব প্রতিষ্ঠানের তা করতে পারার কোনও স্পষ্ট সমর্থন নেই, এমনকি এসব বিশ্বাসের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তাদের সমর্থন করে এমন কোনও প্রায়োগিক প্রমাণও নেই। 

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মামলাকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘হিন্দু’ ও ‘মুসলমান’ হিসেবে প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে বলে যুক্তি দেওয়া হয়েছে ওই আপিলে। বলা হয়েছে, উগ্র হিন্দুত্ববাদী ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ সমর্থিত বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বৃহত্তর অর্থে হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব করে না আর উত্তর প্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল বোর্ড অব ওয়াকফ কোনওভাবেই ভারতের মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করে না।

রায় পর্যালোচনার আপিলে বলা হয়েছে, মামলার প্রমাণ বিবেচনা করতে সুপ্রিম কোর্ট ভুলভাবে দুই পক্ষের ক্ষেত্রেই ভিন্ন ভিন্ন মান অনুসরণ অনুসরণ করেছে। বলা হয়েছে, অযোধ্যা মামলার বিরোধ যে ধরণের তাতে নির্ধারিত হবে ভারত কোন ধরণের রাষ্ট্র হবে, কাদের কাছে থাকবে আর ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় ও বিশ্বাসের মানুষ কোন শর্তে এই বিস্তৃত ভূমিতে বাস করবে।

সুপ্রিম কোর্টের ওই রায় পর্যালোচনার আবেদনকারীদের মধ্যে থাকবেন ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব, লেখক ফারাহ নাকভি, সমাজবিজ্ঞানী নন্দিনি সুন্দর, অ্যাকটিভিস্ট শবনম হাসমি, কবি ও বিজ্ঞানী গওহর রাজা, লেখক নাতাশা বাধাওয়ার, অ্যাকটিভিস্ট আকর প্যাটেল, অর্থনীতিবিদ জয়তি ঘোষ, ইতিহাসবিদ তানিকা সরকার ও অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিবিদ মধু ভাদুরি।