পশ্চিমবঙ্গে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, এনআরসি হবে না: মমতা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে কোনও জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (ক্যাব) হবে না। এখান থেকে কাউকে তাড়ানো যাবে না। ক্যাব’র কারণে কাউকে শরণার্থী হতে দেব না। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে (লোকসভা) ক্যাব বিলে বিতর্কের জন্য অনুমোদন পাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের খড়গপুরে এক সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে মমতা এসব কথা বলেন।

Capture

৪ ডিসেম্বর ভারতে অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে একটি খসড়া বিলে অনুমোদন দেয় দেশটির মন্ত্রিসভা। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে শরণার্থী হওয়া অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দিতে এ বিলটি আনা হয়। এরপর সোমবার বিলটি পার্লামেন্টে বিতর্কের জন্য অনুমোদন পায়। এখন এটির ওপর বিতর্কে অংশ নেবেন আইনপ্রণেতারা। পরে এটি নিয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদন পেলে বিলটি রাজ্যসভায় যাবে। সেখানেও একই প্রক্রিয়ায় অনুমোদন পেতে হবে বিলটির। তারপর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে আইনে পরিণত হবে এটি।

বিরোধীদের তীব্র আপত্তির পরও লোকসভায় ক্যাব উত্থাপনের পর এর কঠোর সমালোচনা করেছেন মমতা। সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘এনআরসি আর ক্যাব নিয়ে ভয় পাবেন না, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। বাংলায় কোনও এনআরসি হবে না। এনআরসি ও ক্যাব একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। আমরা সবাই নাগরিক, আমরা সবাই ভোট দিই। রেশন কার্ড, স্কুল সার্টিফিকেট, জমির পাট্টা কিছু না কিছু তো সবার আছে। তাহলে নাগরিকের প্রমাণ আলাদা করে দিতে হবে কেন? আমরা বাংলায় এসব হতে দেব না। এদেশের কোনও বৈধ নাগরিককে তারা তাড়াতে বা শরণার্থী বানাতে পারবে না।' 

এনআরসি নিয়ে আসামের মানুষে দুর্ভোগ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘আসামে এনআরসি থেকে ১৯ লাখ মানুষের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১৪ লাখ হিন্দু বাঙালির নাম বাদ দিয়েছে তারা। এছাড়াও ১ লাখ  বিহারি ও গোর্খাদের নামও বাদ দিয়েছে।’

বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় নরেন্দ্র মোদি সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,  ‘দেশ ভাগ করবেন না। মানুষকে রুটি, কাপড়, ঘর দিন। কেউ কেউ আছে শুধু ভাষণ দেয় কিন্তু রেশন দেয় না, জীবন দেয় না, চাকরি দেয় না, সভ্যতা দেয় না, শুধু মৃত্যুকে আহ্বান করে। আমরা তাদের পক্ষে নই।’ আমরা জীবন দিতে না পারলেও কারও জীবন কেড়ে নিই না বলেও মন্তব্য করেন মমতা।