প্রশ্নের মুখে নীরব সু চি

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের হয়ে লড়াই করতে যাওয়া সে দেশের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে গেছেন। প্রশ্নের মুখে পড়লেও তিনি নীরব ছিলেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের আদালতে নিজ দেশের হয়ে আইনি লড়াই করবেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই রাজনীতিবিদ। যে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে তিনি দুনিয়াব্যাপী নন্দিত হয়েছিলেন, এবার তাদের গণহত্যার পক্ষে সাফাই গাইবেন তিনি।

noname

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে গত ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-এ মামলা করে গাম্বিয়া। মামলায় নিজ দেশের আইনি লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। ১০ ডিসেম্বর শুরু হওয়া বিচারকাজ চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও কাতারভিত্তিক আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মঙ্গলবার একটি মোটরবাইকের বহরে করে আদালতে আসেন সু চি। সেখানে প্রবেশের পরপরই অপেক্ষারত সাংবাদিকরা তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করলেও তিনি কোনও উত্তর দেননি। বিবিসির পক্ষ থেকে তার কাছে প্রশ্ন তোলা হয়, যাদের রক্ষা করা সম্ভব নয় সুচি তাদেরই [মিয়ানমার সেনাবাহিনী] সুরক্ষা দিতে চাইছেন কিনা। এই প্রশ্নেরও কোনও উত্তর দেননি সু চি।

ধারণা করা হচ্ছে, বুধবার সু চি গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করবেন। প্রশ্ন তুলবেন এই আদালতের বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে।

মঙ্গলবার শুনানিতে বক্তব্য রাখার সময় গাম্বিয়ার নিযুক্ত একজন কৌঁসুলি অ্যান্ড্রু লোয়েনস্টিন রাখাইনের মংডু শহরে বেশ কয়েকটি হত্যার বিবরণ পেশ করেন। আইসিজের ওয়েবসাইট থেকে লাইভ স্ট্রিম করা শুনানিতে এসব বিবরণ যখন পড়ে শোনানো হচ্ছিল তখন অং সান সু চির মুখে কোন অভিব্যক্তি লক্ষ করা যায়নি। কখনও সোজা সামনে তাকিয়ে, কখনও মাটির দিকে তাকিয়ে তাকে বাদীপক্ষের বক্তব্য শুনতে দেখা যায়।