উত্তপ্ত ত্রিপুরা, বন্ধ মোবাইল-ইন্টারনেট, এসএমএস পরিষেবা

নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে ছাত্র সংগঠনগুলোর ডাকা বনধ আর প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের ত্রিপুরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ১২ ঘণ্টার জন্য মোবাইল-ইন্টারনেট এবং এসএমএস পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব সরকার। উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অবরোধের ফলে বহু ট্রেন যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।noname
মঙ্গলবার লোকসভায় পাস হওয়ার পর বুধবার দুপুরে ভারতের রাজ্যসভায় তোলা হবে বিলটি। ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি লোকসভার মতো রাজ্যসভায়ও বিলটি পাস করিয়ে নিতে সক্ষম হবে।

লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের। সেখানে এ বিলের পক্ষে পড়েছে ৩১১ ভোট। ৮০টি ভোট পড়েছে বিলের বিরুদ্ধে। তবে রাজ্যসভায় বিজেপি জোটের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ১২১ ভোট। তবে এনডিএ-র পক্ষে রয়েছেন ১১৬ জন। অবশ্য ভোটাভুটিতে নিজেদের পক্ষে আরও ১৪ জনকে নিয়ে আসার ব্যাপারে আশাবাদী বিজেপি। সেক্ষেত্রে ভোটাভুটিতে ১৩০ জনের সমর্থন পাবে তারা; যা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি।

দৃশ্যত পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই পাস হতে যাচ্ছে বিলটি। তবে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এই বিল তাদের জাতিগত পরিচয় বিনষ্ট করে দেবে।

আগরতলার বিক্ষোভ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান উঠার পরই যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয় রাজ্য সরকার। একজন কর্মকর্তা সংবাদসংস্থা এএনআই-কে বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু গুজব ছড়িয়ে অশান্তি পাকানোর চেষ্টার খবর পেয়েছে পুলিশ। এরপরই পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।’

এর আগে, উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের ধালাই জেলার অন-উপজাতি মালাকানাধীন একটি বাজারে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

বনধের কারণে মঙ্গলবার ত্রিপুরা ছাড়াও আসামের গুয়াহাটিসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন স্থানে জনজীবন থমকে যায়। রাজপথে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে শামিল হন বিক্ষোভকারীরা।

আসামের বিধানসভা ও রাজ্যের সচিবালয় সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ায় নিরাপত্তারক্ষীরা। ডিব্রুগড় জেলায় সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে বিক্ষোভকারীদের। দুলিয়াজানে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হন অন্তত তিনজন।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, এ বিলের ফলে তাদের এলাকায় বিপুল সংখ্যক অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়বে।

বিলটি পাস হওয়াকে “মারাত্মক” পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তিনি বলেন, এর ফলে বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ আসামে ঢুকে পড়বে।