কেন নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল আসাম?

ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে (সিএবি) ‘মুসলিমবিরোধী’ বলে আখ্যা দিয়ে বিরোধীদলগুলো প্রতিবাদ করলেও দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভিন্ন দাবিতে উত্তাল। আসাম-ত্রিপুরায় শরণার্থীদের অবৈধ অভিবাসীর স্বীকৃতি বাতিল ও এই অঞ্চলকে সিএবি আওতামুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ করছে তারা। কিন্তু তাদের বিক্ষোভ ও দাবির সঙ্গে ভারতের বিরোধীদের দাবির মিল নেই, সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণ ও দাবিতে তারা রাজপথে নেমেছে।

vbk-tripura-cab-afp

গত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে ৩১১-৮০ ভোটে লোকসভার অনুমোদন পায় ‘দ্য সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৯’ শীর্ষক বিতর্কিত বিলটি। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আনা বিলটি বুধবার রাজ্যসভায় উত্থাপনের পর আইনপ্রণেতাদের বিতর্ক হয়। পরে বুধবার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও পাস হয় তা। নরেন্দ্র মোদি সরকারের মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর ধারাবাহিকভাবে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিলটি পাস হয়।

বিলটিতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে নিপীড়নের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একারণে এতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্য রয়েছে দাবি বিরোধীদের।

এই বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে আসাম ও ত্রিপুরা। গত কয়দিন ধরেই রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বুধবারও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে সেখানকার পরিস্থিতি। বিলের প্রতিবাদে করা আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে যেন বারুদের গোলার ওপর অবস্থান করছে আসাম। ইতোমধ্যেই ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্যে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সহিংসতা এড়াতে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। আসামের এই বিক্ষোভের নেতৃত্বে রয়েছে ছাত্ররা।

সিএবি’কে মুসলিমবিরোধী দাবি করে রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ বিক্ষোভ করলেও আসামের ছাত্রদের আন্দোলনের কারণ সম্পূর্ণ আলাদা। তারা মূলত ওই বিলের দুই অনুচ্ছেদের ওপর জোর দিচ্ছে। প্রথমত, 'অবৈধ অভিবাসী'কে শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি এবং অন্য আইনের মাধ্যমে তাদেরকে ভারতীয় নাগরিকত্ব অর্জনের সুযোগ বাতিল করা। দ্বিতীয়ত, এই অঞ্চলগুলোকে সিএবি’র আওতামুক্ত করা।

২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের ওই বিলে শরণার্থীকে ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসেবে স্বীকৃতির বিধান ছিল না। আর সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে উল্লিখিত অঞ্চলগুলো এবং ইনার লাইন পারমিট (আইএলপি) এর আওতাভুক্ত এলাকাগুলো এই আইনের অন্তর্ভূক্ত ছিল না। সূত্র: আপডেট টেন নিউজ।