'আমি মুসলিম নই, তবু প্রতিবাদ করবো'

মুসলিম না হয়েও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। বলেছেন, সত্যের পক্ষে দাঁড়াতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই শিক্ষার্থীর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশি হামলার পর তিনি গোটা দেশেই অনিরাপদ বোধ করছেন এবং তার মুসলিম বন্ধুদের ‘ভারতীয়’ পরিচয় অটুট থাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

Captureবাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে নিপীড়নের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব নিশ্চিতে সম্প্রতি আইন সংশোধন করেছে ভারত। আইনটিকে মুসলিমবিরোধী আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভে নেমেছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ। রবিবার সন্ধ্যায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামে জামিয়ার শিক্ষার্থীরা। তখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়।

পুলিশি তাণ্ডবের পর ঝাড়খণ্ডের রাঁচি থেকে জামিয়ায় পড়তে আসা এক নারী শিক্ষার্থী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি মুসলিম নই, তবু এই আন্দোলন করছি।’ কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন ওই শিক্ষার্থী। বলেন, মুসলিম না হয়েও আমি প্রথম দিন থেকে এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভের প্রথম সারিতে রয়েছি। কেউ প্রশ্ন করতে পারেন আমি কেন আন্দোলনে, আমার পরিবারের কী ক্ষতি হবে এতে? ... তবে আমি মনে করি আমরা যদি সত্যের পাশে দাঁড়াতেই না পারি তবে আমাদের পড়াশোনা কী কাজে লাগবে।’

অভিযোগ উঠেছে, ক্যাম্পাসের শৌচাগারে ঢুকেও শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরাও বেধড়ক লাঠিপেটা থেকে বাদ যায়নি। লাইব্রেরির বাইরের ছাত্রছাত্রীদের মাথার উপরে হাত তুলে লাইন দিয়ে হাঁটিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়।

ওই নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি এই গোটা দেশে নিরাপদ বোধ করছি না। কোথায় যাবো এবং কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেবো তা আমি জানি না। আগামীকাল আমার বন্ধুরা ভারতীয় থাকবে কিনা তা জানি না।’