বার্থ ট্যুরিজম বা জন্মগত পর্যটন থামানোর পরিকল্পনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এ সপ্তাহেই এ ব্যাপারে একটি নতুন নিয়ম করা হতে পারে।
বার্থ ট্যুরিস্ট বলতে এমন ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, যারা সন্তান প্রসবের জন্য বিদেশ ভ্রমণ করে থাকেন। এর উদ্দেশ্য থাকে, বিদেশের মাটিতে জন্মগ্রহণের মাধ্যমে তাদের সন্তানরা যেন সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিকত্ব পেতে পারে।
মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে দেশটিতে জন্মগ্রহণকারীদের নাগরিকত্ব অর্জনের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। তবে ট্রাম্প বরাবরই এর সুযোগ নিয়ে বার্থ ট্যুরিজমের বিরোধী।
২০২০ সালের ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। গতবারের মতো এবারও এ পদের জন্য দলীয় মনোনয়ন চাইবেন ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, এই নির্বাচনের বছরকে সামনে রেখে শিগগিরই বার্থ ট্যুরিজম সংক্রান্ত নতুন নিয়ম চালু করবে ট্রাম্প প্রশাসন।
দৃশ্যত আগামী সপ্তাহগুলোতে ভিসা পরীক্ষার প্রক্রিয়া আরও কঠোর করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডসহ বার্থ ট্যুরিজমের সঙ্গে জড়িত জাতীয় নিরাপত্তার সুরক্ষা এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি মোকাবিলা করা।
এ সংক্রান্ত খবর প্রথম প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যম এক্সিওস। এটি এখনও পরিষ্কার নয় যে, ট্রাম্প প্রশাসন কীভাবে নতুন নীতিটি কার্যকর করার পরিকল্পনা করছে। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমেই এটি করা যেতে পারে এবং এর অনুমোদনের জন্য কংগ্রেসেও যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
২০১৯ সালে এক নারীসহ ১৯ জনকে বার্থ ট্যুরিজম চালানোর দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। সংবাদমাধ্যম এসোসিয়েটেড প্রেস বলছে, এই উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেওয়া বেশিরভাগ ‘পর্যটক’ ছিল চীন, রাশিয়া ও নাইজেরিয়ার নাগরিক।
ইমিগ্রেশন ও শুল্ক বিভাগের সাবেক একজন কর্মকর্তা জন্মসূত্রে নাগরিকত্বকে অবৈধ অভিবাসনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে আগত আশ্রয় আবেদনকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বার্থ ট্যুরিজমকে দায়ী করেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি নিউজ চ্যানেলকে তিনি বলেন, ‘তারা মনে করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিতে এটি তাদের জন্য সোনার টিকিট।’
সন্তান জন্ম দিতে কতজন পর্যটক যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করেন কর্মকর্তারা তার কোনও পরিসংখ্যান সরবরাহ করেননি। তবে অভিবাসন সংক্রান্ত বিধিনিষেধের জন্য কাজ করা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইমিগ্রেশন স্টাডিজের ধারণা, বছরে এই সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজারের মতো হতে পারে।