মোদির সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফর ১৬ মার্চ : হিন্দুস্তান টাইমস

আগামী ১৬ মার্চ বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরদিন ১৭ মার্চ ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকীর বর্ষব্যাপী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করবেন তিনি। আসন্ন এ সফর পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে দিল্লির আগ্রহের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।noname
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত কর্মকর্তারা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, এই অনুষ্ঠানের আগের দিনই ঢাকায় পৌঁছাবেন মোদি। বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান বক্তা হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এমন এক সময়ে মোদির এই সফর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যার কিছুদিন আগেই বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন পাস করে ভারত। ওই আইনে ২০১৫-এর আগে ভারতে গিয়ে বসবাস করা সব অমুসলিমকে দেশটির নাগরিকত্ব দেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে। এ আইনকে কেন্দ্র করে দৃশ্যত দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি হয়।

আসামের ২০১৯ সালের নাগরিকপঞ্জির পাশাপাশি নতুন নাগরিকত্ব আইনও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে কথিত অবৈধ অনুপ্রবেশের ইঙ্গিত দিয়েছিল।

২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর ভারতের পার্লামেন্টে সিএএ (নাগরিকত্ব আইন) পাস হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের তিন মন্ত্রী বিভিন্ন কারণে ভারত সফর বাতিল করেন।

গত ২০ জানুয়ারি গালফ নিউজ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিএএ-র প্রয়োজন ছিল না বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে একইসঙ্গে তিনি এটিকে ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

এ বছর ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে দুই বাংলাদেশি নাগরিককে দেশটির তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ পদকে ভূষিত করা হয়। তারা হচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী এবং খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ইনামুল হক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে মোদি বোঝাতে চাইছেন ভারতের বিতর্কিত নাগরিকপঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইন সত্ত্বেও দুই দেশের সম্পর্ক এখনও বেশ মজবুত।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ভারত তার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে স্বাচ্ছন্দ্যে নিঃশ্বাস ফেলছে। বাংলাদেশ সরকার প্যান-ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী এবং জামাআতুল মুজাহিদিনের মতো উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। নিয়মিত তথ্য বিনিময়ে উভয় দেশই সীমান্তে পরস্পরকে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করে। উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে বার্ষিক আলাপ-আলোচনা হয়।

ভারত যখন নিবিড় প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে উৎসাহিত করে এবং ঢাকার জ্বালানি চাহিদা পূরণ করে, হাসিনা সরকার তখন দিল্লিকে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের সুযোগ দিতে কাজ করছে।