ভারতকে টুকরো টুকরো করতে চায় কংগ্রেস-আম আদমি: মোদি

আম আদমি পার্টি (আপ) ও কংগ্রেস ভারতকে টুকরো টুকরো করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি অভিযোগ করেছেন, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীরা দেশের পতাকা ও সংবিধানকে সামনে রেখেই একের পর এক আইনবিরুদ্ধ কাজ করে চলেছেন। আর এসবের পেছনে এইসব দলের চক্রান্ত রয়েছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দিল্লির কড়কড়ডুমার নির্বাচনি এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

NARENDRAMODI

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) পাস করে ভারত। এতে ধর্মীয় কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে গেলে তাকে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান রাখা হয়। তবে ওই তালিকায় মুসলিমদের বাদ দেওয়া হয়। একারণে একে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে দিল্লির জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহিনবাগসহ দেশজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। উত্তর প্রদেশে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২১ জন। ওই বিক্ষোভকারীদের দেশবিরোধী আখ্যা দিয়ে গুলি করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরসহ ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা। এরপরই দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহিনবাগে সিএএ বিরোধী গুলি চালায় বন্দুকধারীরা।

সোমবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নাম না উল্লেখ করে তাকে ইঙ্গিত করে তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বলেছেন, ‘কিছু লোক রাজনীতি বদলাতে এসেছিলেন, কিন্তু এখন তাদের মুখোশ খসে গেছে। তারা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। সেনাবাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাদের অপমান করেছিলেন।’ এরপর স্বভাবসিদ্ধভাবেই তিনি প্রশ্ন তোলন, ‘এমন দিল্লি কি দিল্লিবাসী কখনও চেয়েছিলেন?’ মোদি দাবি করেন, ‘একটা সময় ছিল, যখন দিল্লিতে প্রায়শই সন্ত্রাসবাদী হামলা হতো। এই হামলায় জড়িতদেরই যখন বাটলা হাউসে পুলিশ মেরেছিল, তখন তারাই তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তারাই ভারতকে টুকরো-টুকরো করতে চায়।’ অন্যদিকে অমিত শাহের মতো বিরোধীদের সরাসরি ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’ বলে আখ্যা দেননি মোদি। তবে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে গুলি চালানো  নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি প্রধানমন্ত্রী।

এরপরই জামিয়া মিলিয়া ও শাহিনবাগে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিক্ষোভের প্রসঙ্গ টেনে এনে ঘটনাক্রমকে এক সুতোয় গাঁথার চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘জামিয়া, শাহিনবাগ, গত কয়েকদিন ধরে সিএএ নিয়ে বিক্ষোভ চলছে। কিন্তু, এটা শুধুমাত্র বিক্ষোভ নয়। এটা আসলে ষড়যন্ত্রের ব্যবহারিক প্রয়োগ চলছে। এর পেছনে আপ ও কংগ্রেসের রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে।’

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটা কেবল আইনের বিরোধিতা হলে তা সরকারের যাবতীয় আশ্বাসের পর মিটে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু দেশের পতাকা ও সংবিধানকে সামনে রেখে জ্ঞান দেওয়া হচ্ছে। বিক্ষোভে হিংসা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। কিন্তু, তারা আদালতের কথা মানেন না। তারা আদালতের কথা শোনেন না। অথচ গোটা দুনিয়াকে দেশের সংবিধান দেখাচ্ছেন।’