করোনা ভাইরাস

চীনে আক্রান্তদের খাবার সরবরাহ করছে রোবট

চীনে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। ইতোমধ্যেই দেশটিতে এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। আর ৪২ হাজারেরও বেশি মানুষের শরীরে এ ভাইরাস সংক্রমণের কথা নিশ্চিত করেছেন কর্মকর্তারা। এখনও হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রয়েছেন আক্রান্ত বহু রোগী। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভিন্ন এক ব্যবস্থা চালু করেছে দেশটির দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ গুয়াংডং-এ অবস্থিত গুয়াংডং প্রভিন্সিয়াল পিপলস হসপিটাল। সেখানে আক্রান্তদের ওষুধ ও খাবার সরবরাহ করতে রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে।13
ছোট ফ্রিজ আকৃতির দুই চাকাযুক্ত এসব রোবট হাসপাতালের ভেতরে চলাচলে সক্ষম। তারা হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা রোগীদের কাছে খুব সহজেই পৌঁছাতে পারে। নিজেরাই প্রয়োজন অনুযায়ী, আক্রান্তদের কক্ষের দরজা খুলতে ও বন্ধ করতে পারে।

সংক্রমণ এড়াতে রোবট ব্যবহার শুধু ওই হাসপাতালেই সীমাবদ্ধ নেই। কোনও কোনও ক্ষেত্রে হোটেল এমনকি দোকানপাটেও প্রযুক্তির এমন সহায়তা নেওয়ার খবর মিলেছে। কোথাও আবার দোকান থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে পাউরুটির মতো খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে রোবট।

এদিকে করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে চীনে বিশেষজ্ঞ তদন্ত দল পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সোমবার সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস আধানোম বলেন, “চীনে কখনও ভ্রমণ করেননি এমন মানুষের মধ্যেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপারটি উদ্বেগজনক। এটা হয়তো ‘কেবল শুরু’। সামনে আরও কঠিন সময় আসছে।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আরও বলেন, ‘একটি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থার জন্য দেশগুলোকে করোনা ভাইরাসের জন্য তৈরি থাকতে হবে। এর অর্থ হচ্ছে, দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরির ব্যবস্থা তৈরি রাখা, বিভিন্ন সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা যা প্রয়োজনে কাজে লাগবে।’

তিনি বলেন, চীনের বাইরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা ধীরগতিতে দেখা যাচ্ছে। তবে তা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। যে ধরনের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সেগুলো যদি কোনওভাবে লঙ্ঘন করা হয়, তাহলে এই ভাইরাস বিজয়ী হবে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরের একটি বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। একপর্যায়ে এই ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি (হেলথ ইমার্জেন্সি) ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও। এখন পর্যন্ত অন্তত ২৮টি দেশে শনাক্ত হয়েছে এই ভাইরাস। চীনের বাইরে ফিলিপাইনে এতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তিও চীনা নাগরিক।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশকে পুরো দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে চীন। ওই অঞ্চলের সঙ্গে বাইরের দুনিয়ার সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।