করোনা ভাইরাসের আনুষ্ঠানিক নাম দিলো ডব্লিউএইচও

২০১৯ সালে চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের আনুষ্ঠানিক নাম দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। নতুন নাম দেওয়া হয়েছে সিওভিআইডি-১৯। মঙ্গলবার ডব্লিউএইচও ভাইরাসটির এই নতুন নাম ঘোষণা করে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ।
সিওভিআইডি-১৯ দিয়ে বোঝানো হয়েছে ২০১৯ সালে উৎপত্তি হওয়া করোনা ভাইরাস। তবে নতুন নামকরণ যেন চীন কিংবা অন্য কোনও পক্ষের জন্য অসম্মানজনক না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. টেড্রোস অ্যাধনম ঘেরিবাইসাস সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ফোনালাপে বলেন, আমাদের এমন একটি নাম খুঁজতে হয়েছিল যা কোনও ভৌগোলিক অবস্থান, কোনও প্রাণী, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর লোকজনকে বোঝায় না। এছাড়া এর উচ্চারণও সহজ।

করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যেই চীনে বিশেষজ্ঞ তদন্ত দল পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সোমবার সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস আধানোম বলেন, “চীনে কখনও ভ্রমণ করেননি এমন মানুষের মধ্যেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপারটি উদ্বেগজনক। এটা হয়তো ‘কেবল শুরু’। সামনে আরও কঠিন সময় আসছে।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আরও বলেন, ‘একটি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থার জন্য দেশগুলোকে করোনা ভাইরাসের জন্য তৈরি থাকতে হবে। এর অর্থ হচ্ছে, দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরির ব্যবস্থা তৈরি রাখা, বিভিন্ন সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা যা প্রয়োজনে কাজে লাগবে।’

তিনি বলেন, চীনের বাইরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা ধীরগতিতে দেখা যাচ্ছে। তবে তা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। যে ধরনের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সেগুলো যদি কোনওভাবে লঙ্ঘন করা হয়, তাহলে এই ভাইরাস বিজয়ী হবে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরের একটি বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। একপর্যায়ে এই ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি (হেলথ ইমার্জেন্সি) ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও। এখন পর্যন্ত অন্তত ২৮টি দেশে শনাক্ত হয়েছে এই ভাইরাস। চীনের বাইরে ফিলিপাইনে এতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তিও চীনা নাগরিক।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশকে পুরো দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে চীন। ওই অঞ্চলের সঙ্গে বাইরের দুনিয়ার সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।