দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে

দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে। রবিবার নতুন করে আরও ৪৬ জনের শরীরে এ ভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০২। দেশটির সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
চীনের বাইরে এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যার দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইরান। দেশটিতে এ ভাইরাসে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা পাঁচ।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিদিনই পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই পরিস্থিতি গুরুতর পর্যায়ে মোড় নিয়েছে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

চীনে যেমন উহান শহরকে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল হিসেবে দেখা হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেত্রেও তেমনি দক্ষিণাঞ্চলীয় পাশাপাশি দুই শহরকে এ ভাইরাস ছড়ানোর সূত্র হিসাবে দেখা হচ্ছে। এ দুই শহর হচ্ছে দেগু ও চোংডো। সন্দেহের তীর গিয়ে পড়েছে ওই অঞ্চলের শিনচিওঞ্জি নামে ক্ষুদ্র একটি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের দিকে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আক্রান্তদের অধিকাংশই শিনচিওঞ্জি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনুসারী। মোট আক্রান্তের মধ্যে ৩০৯ জন বা ৫৫ শতাংশই এ সম্প্রদায়ের সদস্য। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মাধ্যমেই দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপকভাবে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। দেগু শহরে শিনচিওঞ্জি সম্প্রদায়ের গির্জা সংলগ্ন সড়ক জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।

বলা হচ্ছে, দেগু ও চোংডোতে এই ধর্মীয় গোষ্ঠীর কয়েকশ সদস্য ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের কথা জানানোর পর তাদের অনেকের শরীরেই করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়। তারপর থেকে নতুন করে আক্রান্ত যেসব রোগী মিলছে তাদের সিংহভাগই চোংডো শহরের দেনাম নামের একটি হাসপাতালে। এই একটি হাসপাতালেই এখন পর্যন্ত ১১৪ জনের শরীরে এ ভাইরাস পাওয়া গেছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শুক্রবার শিনচিওঞ্জি সম্প্রদায়ের নয় হাজারেরও বেশি সদস্যকে পারবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে কীভাবে তাদের মধ্যে এতো মানুষ আক্রান্ত হলেন!

দেগু দক্ষিণ কোরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর। ২৫ লাখ জনসংখ্যার এই শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাস্তায় মানুষজন বলতে গেলে চোখেই পড়ছে না। লোকজনের ভয়, তাদের শহরের পরিণতি না যেন উহানের মতো হয়। সূত্র: সিএনএন।