করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে

দুনিয়াজুড়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি। এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ২৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে তিন হাজার ১৫ জনই চাইনিজ। বাকি ২৬৭ জন ইতালি, ইরান, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। শুক্রবার দিবাগত রাতে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।noname
আক্রান্তদেরও অধিকাংশই চীনা নাগরিক। আক্রান্ত ও প্রাণহানির দিক দিয়ে চীনের পরের অবস্থানে রয়েছে ইতালি ও ইরান।

খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গুগল, ফেসবুক, আমাজন ও মাইক্রোসফট সিয়াটল এলাকার কর্মীদের বাসায় বসে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। সিয়াটলের লক্ষাধিক মানুষ আপাতত বাসা থেকে অফিস করবেন।

এরমধ্যেই শুক্রবার নতুন করে আরও ছয়টি দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ইতালিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে। ইরানে মারা গেছেন ১২৪ জন। ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদর দফতরে সব ধরনের বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। আগামী ২৩ মার্চ পর্যন্ত ইইউ সদর দফতরে কোনও বৈঠক আয়োজন করা হবে না। দেশটির পার্লামেন্ট ব্রাসেলসের বেশিরভাগ সরকারি অফিসের ভেতরে ও বাইরে জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মানুষকে যত বেশি সম্ভব বাড়ির ভেতরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে হোলি উৎসবের কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। মোদি সরকারের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সমাবেশও বাতিল করা হয়েছে।

চীন থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করে নিয়ে আসা, দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং থেকে শুরু করে সন্দেহভাজনদের আলাদা করে রাখা— যাবতীয় সতর্কতা নিয়েছিল ভারত। তারপরও আক্রান্তের সংখ্যা দুই ডজন ছাড়িয়েছে। ফলে এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। প্রতি বছর রাষ্ট্রপতি ভবনে হোলি উৎসব পালন করা হয়। সব রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে উৎসব পালন করেন। কিন্তু বুধবার বিকালে রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে জানানো হয়, এ বছর সেই অনুষ্ঠান হবে না। কারণ, দেশে করোনার সংক্রমণ।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরের একটি বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। একপর্যায়ে এই ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি (হেলথ ইমার্জেন্সি) ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ইতোমধ্যেই হুবেই প্রদেশের রাস্তায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের ব্যক্তিগত যান চলাচল। ইতোমধ্যেই করোনা ভাইরাসের উপসর্গ গোপন করাকে ফৌজদারি অরপাধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে চীনের একটি আদালত। একইসঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করলে তার মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা, সিএনএন।