কংগ্রেস নেতা সিন্ধিয়ার পদত্যাগ, পতনের মুখে মধ্যপ্রদেশ সরকার

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর পদত্যাগ করেছেন ভারতের মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তার সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার ২১ জন আইনপ্রণেতা। এতে পতনের মুখে পড়েছে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের সরকার। সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও চারবারের পার্লামেন্টারিয়ান সিন্ধিয়া বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতের সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, তাকে রাজ্যসভার সদস্যপদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হতে পারে।জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া

 

মধ্যপ্রদেশের বিধানসভার আসন সংখ্যা ২৩০। সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন পড়ে ১১৬টি আসন। এরমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ সরকারের প্রতি মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সমর্থন ছিল ১২০ জন আইনপ্রণেতার। তবে ২১ এমএলএ’র পদত্যাগ গৃহীত হলে তা নেমে আসবে ১০৪ জনে। সেক্ষেত্রে পতন হতে পারে এই সরকারের। রাজ্যটিতে বিজেপির রয়েছে ১০৭ আসন।
কয়েক দিন ধরেই মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে চাপা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার থেকে দলীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। খবর বের হয়, কমলনাথ সরকারের ছয় মন্ত্রীসহ ১৬ জন কংগ্রেস বিধায়ককে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে গিয়ে হোটেলে রেখেছে বিজেপি।

পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নেয় মঙ্গলবার সকালে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে দেখা করেন জ্যোতিরাদিত্য। তারপরই দল থেকে পদত্যাগের চিঠি কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর কাছে পাঠিয়ে দেন তিনি। এর পরপরই ছয় মন্ত্রীসহ ২২ জন কংগ্রেস এমএলএ’ও রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।

মঙ্গলবার সকালে এক টুইট বার্তায় নিজের পদত্যাগের চিঠি প্রকাশ করেন সিন্ধিয়া। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘বরাবরই আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল আমার রাজ্য ও দেশের জনগণের সেবা করা। কিন্তু আমি মনে করছি এই দলের মধ্যে থেকে সেই কাজ আর আমি করতে পারছি না’। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ‘দলবিরোধী’ কাজের অভিযোগে জ্যোতিরাদিত্যকে বহিষ্কার করে কংগ্রেস। রাজ্য সেক্রেটারি কেসি বেনুগোপাল জানিয়েছেন, পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে বৈঠকে বসবেন দলীয় নেতারা।

কংগ্রেস নেতৃত্ব নিয়ে কিছুদিন ধরেই অসন্তুষ্ট ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। একসময় গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এই নেতা। গত বছর কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করায় বিজেপিকে সমর্থন করা সীমিত কয়েক জন বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতার একজন হলেন সিন্ধিয়া।