বিশ্বব্যাপী মহামারি পরিস্থিতি ঘোষণা করা হলেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে এখনও করোনার সংক্রমণ অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে আছে বলা চলে। সেখানে এখন পর্যন্ত মাত্র ২১৫ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। ভানুয়াতু, টোঙ্গা, সামোয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও পালাউসহ বেশ কয়েকটি দেশ এখনও করোনামুক্ত। তবে জাতিসংঘ বলছে, যেভাবে ওই অঞ্চলে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে তাতে করোনার সংক্রমণ বাড়ার ও প্রাণহানির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এসব গুজবে কান না দিয়ে সরকারিভাবে যেসব স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা হচ্ছে তা মেনে চলার জন্য অঞ্চলটির বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক সানাকাসামারাসিনহাকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আবাসিক সমন্বয়ক সানাকা সামারাসিনহা ফিজি থেকে গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘গুজব ঠেকানোর কাজটি ওই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সরকার জাতিসংঘের কার্যালয়গুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। ভাইরাস থেকে মুক্তি বা নিজেকে সুরক্ষার উপায় নাম দিয়ে এসব গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এগুলো প্রমাণিত নয়। অনেকগুলোই একেবারেই ভুল। এসব গুজব মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলছে। কিভাবে নিরাপদ থাকতে হবে তা নিয়ে মানুষকে ভ্রান্ত ধারণা দিচ্ছে।’
সানাকা আরও বলেন, ‘আরেকটি বিষয় হলো, কিছু গুজবের মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু সংস্থা বা জাতিগত গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে দায়ী করার চেষ্টা চলছে। সুতরাং মানসিক চাপ ও আতঙ্ক তৈরিরও ঝুঁকি রয়েছে। ইবোলা প্রাদুর্ভাবের সময় আমি লাইবেরিয়াতে কাজ করেছি। তখন দেখেছি এ ধরনের গুজবের কারণে আস্থার জায়গাটি নাজুক হয়ে গিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানকে কিংবা একে অপরকে বিশ্বাস করতে চাইছিলো না।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, বিশ্ব গুজবের মহামারিতেও ভুগছে। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো এসব গুজবকে তিনি ‘বিষ’ এর সঙ্গে তুলনা করেছেন। যা মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সংগঠক, সাংবাদিক ও অন্যান্যদের আহ্বান জানান এসব গুজব রুখে দিতে ও সঠিক তথ্য মানুষকে জানাতে। যাতে বিশ্বব্যাপী গুজব ও মিথ্যা তথ্যকে কেন্দ্র করে ঘৃণা, হানাহানি না ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।