নীরবতা ভাঙলেন হামলাকারী ফারুকের বোন

ক্যালিফোর্নিয়ার বন্দুক হামলায় পুলিশের গুলিতে নিহত সন্দেহভাজন হামলাকারী সাঈদ রিজওয়ান ফারুকের বোনের একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে সিবিএস নিউজ। ফারুকের বোন সায়রা খান সিবিএস নিউজকে জানান, তিনি কল্পনাও করতে পারেননি, তার ভাই কিংবা ভাতৃবধু  ওই কাজ করতে পারে।

‘তারা সুখী দম্পতি ছিলেন, তাদের ছয়মাস বয়সী এক কন্যা সন্তানও ছিল। তারা কেন এমন করবেন, সেটা এখনো আমাদের কাছে অস্পষ্ট।’ মন্তব্য করেন তিনি।

সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন সিবিএস নিউজের ডেভিড বেগনাড।  ফারুকের বোন সায়রার কাছে তিনি জানতে চান, এই ঘটনায় তারা ক্ষুব্ধ কিনা? এর উত্তরে সায়রা জানান, অবশ্যই তারা ক্ষুব্ধ। সায়রার স্বামী ফারহান খান বলেন, ‌‘ছয় মাস বয়সী শিশুকে ফেলে এই রকম ভয়াবহ একটি কাণ্ড করায় আমরা ক্ষুব্ধ এবং ব্যথিত।’

এদিকে সিবিএস নিউজ আরও জানাচ্ছে, ২৮ বছর বয়সী ফারুক বিয়ের জন্য অনলাইনে পাত্রী খুঁজছিলেন। একটি ডেটিং সাইটের মাধ্যমে তার সাথে পরিচয় হয় তাশফিন মালিকের। ২০০৮ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সন্দেহ করা হচ্ছে, তাশফিন মালিকের সঙ্গেই জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতা ছিল। স্ত্রীর সূত্রেই স্বামী ফারুক জঙ্গিদের সাথে জড়িয়ে পড়েন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পরিবারের পক্ষ থেকে ফারুকের বোন সায়রা এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে তাতে তারা খুবই ব্যথিত। নিহত এবং আহতের স্বজনদের তারা সমবেদনা জানান। সায়রা আরও জানান, আগে থেকে  টের পেলে অবশ্যই তার ভাইকে এই পথ থেকে ফেরাতেন তিনি।

সিবিএসের সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, তিনি তার ভাইয়ের কাছে কখনও কোনো অস্ত্র দেখেছেন কিনা? এর উত্তরে সায়রা জানান, তার ভাইয়ের কাছে অস্ত্র ছিল। কিন্তু এটা তিনি সাধারণ একটি স্টোর থেকে কিনেছিলেন, যেমনটা অনেকেই কেনেন।

সায়রা আরও বলেন, তার ভাই কথাবার্তা কম বলতেন, চাপা স্বভাবের ছিলেন। ফারুকের স্ত্রীর ব্যাপারে সায়রার মন্তব্য, তার ভাতৃবধুও লাজুক এবং চাপা স্বভাবের ছিলেন।

এই ঘটনায় নিহত এবং আহতদের স্বজনদের প্রতি সায়রা এক ধরনের দায়বদ্ধতা অনুভব করছেন বলে সিবিএসকে জানান। তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের কাছে যেতে চাই। আমার সমবেদনা প্রকাশ করতে চাই। আমি এই দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালবাসি।’

এ সময় সিবিএসের সাংবাদিক ফারুকের বোনের কাছে জানতে চান, এই ঘটনায় তিনি তার ভাইকে ক্ষমা করে দেবেন কিনা? এর উত্তরে সায়রা বলেন, ‘এটা খুব কঠিন সিদ্ধান্ত। সে যা করেছে, তার জন্য তাকে ক্ষমা করতে পারবো কিনা, আমি জানি না।’

কিন্তু সায়রার স্বামী ফারহান দৃঢ়ভাবে বলেন,  নিজ পরিবার, স্বজন, তার শিশু সন্তান এবং অসংখ্য নিরপরাধ মানুষের যে ক্ষতি ফারুক করেছে, এজন্য তাকে কখনও ক্ষমা করবেন না তিনি।

/এইআর/বিএ/