৩২ বছর পর সন্তান ফিরে পেলেন চীনা দম্পতি

১৯৮৮ সালে একটি হোটেলের সামনে থেকে অপহৃত হয়ে যাওয়ার পর ছেলেকে ফেরত পেয়েছেন চীনের এক দম্পতি। তিন দশকের বেশি সময় ধরে ছেলেকে ফিরে পেতে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তারা। তাদের প্রচেষ্টায় ২৯ জন হারিয়ে যাওয়া সন্তান ফিরে গেছে বাবা-মায়ের কাছে। অবশেষে ৩২ বছর পর খুঁজে পেয়েছেন নিজেদের সন্তানকে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে লি জিংঝি এবং মাও ঝেনজিং দম্পতির এই মরিয়া প্রচেষ্টার কথা উঠে এসেছে।noname

১৯৮৮ সালে লি জিংঝি এবং মাও ঝেনজিং দম্পতির ছেলে মাও ইন এর বয়স ছিলো দুই বছর। একদিন বাবার সঙ্গে নার্সারি থেকে বাড়ি ফেরার পথে পানি চান ছেলে। একটি হোটেলের সামনে তাকে দাঁড় করিয়ে পানি নিয়ে ফিরে এসে তাকে আর পাননি মাও ঝেনজিং। তাকে অপহরণ করে ৬ হাজার ইউয়ানে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল সিচুয়ান প্রদেশের এক সন্তানহীন দম্পতির কাছে।

অপহরণের পর ছেলের খোঁজে মরিয়া হয়ে ওঠেন বাবা-মা। ছেলের খোঁজ করতে গিয়ে নিজের চাকরিও ছেড়ে দেন মা লি জিংঝি। ১০ টিরও বেশি প্রদেশে লাখ লাখ প্রচারপত্র ছড়িয়েছেন। সাহায্য চেয়ে চেয়ে বছরের পর বছর উপস্থিত হয়েছেন একাধিক টেলিভিশন শোতে। কিন্তু সন্ধান পাননি নিজের ছেলের।

২০০৭ সালে ‘বেবি কাম ব্যাক হোম’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে সন্তান হারানো বাবা-মায়েদের জন্য কাজ করতে শুরু করেন লি জিংঝি। এর মধ্য দিয়ে ২৯ জন হারিয়ে যাওয়া শিশুকে পরিবারের কাছে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হন তিনি। কিন্তু তারপরও নিজের ছেলের খোঁজ পাননি।

গত এপ্রিলে সিচুয়ান প্রদেশে ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তির খোঁজ পায় চীনের পুলিশ। ওই ব্যক্তিকে ১৯৮০’র দশকের শেষ দিকে দত্তক নেওয়া হয়েছিল। সেই সূত্র ধরে ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায় দত্তক নেওয়া গু নিঙিং হলেনলি জিংঝি এবং মাও ঝেনজিং দম্পতির ছেলে মাও ইন।

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ওই ব্যক্তিকে বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ। ৩৪ বছর বয়সী মাও ইন বর্তমানে একটি হোম ডেকোরেশনের ব্যবসা চালাচ্ছেন। বাবা-মাকে ফেরত পাওয়ার পর এখন বাকি জীবনটা তাদের সান্নিধ্যেই কাটাতে চান তিনি।