করোনায় বিশ্বজুড়ে ‘অন্যরকম’ ঈদ

করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেই সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রবিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। তবে সুরক্ষা ও শারীরিক দূরত্বের বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার কারণে এবারের উদযাপন একেবারেই অন্যরকম। কোনও কোনও দেশে কড়া লকডাউনের মধ্যেই ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে, কোনও কোনও দেশ আবার বিধিনিষেধ শিথিলও করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা এক মাসের সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর উদযাপন করে। সকালে তারা খুতবায় অংশ নেয়, জামায়াতে নামাজ আদায় করে, নামাজ শেষে হাসিমুখে কোলাকুলি করে। তবে এবারের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। বিশ্বজুড়ে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েই চলছে। অনেক দেশেই চলছে লকডাউন। পবিত্র রমজান মাসজুড়ে করোনার বিধিনিষেধের মধ্যেই মুসলমানেরা সিয়াম সাধনা করেছে। বিভিন্ন দেশে ঈদুল ফিতরের উৎসবেও কম–বেশি বিধিনিষেধ থাকছে।

সৌদি, মিসর, তুরস্ক ও সিরিয়া করোনার বিস্তার ঠেকাতে ঈদে গা ঘেঁষে জামাতে নামাজ আদায়সহ গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে। সৌদি আরবে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে শনিবার থেকে পাঁচ দিনের কারফিউ শুরু হয়েছে। দিন–রাতজুড়ে এই কারফিউ চলবে। শনিবার জারি করা সৌদি আরবের রাজ ডিক্রিতে বলা হয়, মক্কা ও মদিনার দুটি পবিত্র মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতি ছাড়াই ঈদের নামাজ হবে।

করোনার ব্যাপক সংক্রমণের মুখে গত মার্চে ইরানে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। নাগরিকদের ঈদের সময় ভ্রমণ এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে তেহরান। অবশ্য সম্প্রতি এই বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। তবে ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে নতুন করে করোনার সংক্রমণের ঢেউ আসুক, তা তারা চান না। তাই এ ব্যাপারে জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে।

ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও আফগানিস্তানে ঈদের কেনাকাটা উপলক্ষে ব্যাপক জনসমাগম লক্ষ করা যায়। সে সময় করোনার স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হয়। ইন্দোনেশিয়ায় এখন অনেক মসজিদ বন্ধ। তাই রাস্তার ওপরই নারী ও পুরুষ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।

জেরুজালেমের পবিত্র আল আকসা মসজিদ ঈদের পর মুসল্লিদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। লেবাননের সুন্নি ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবারের জুমার নামাজের জন্য কেবল মসজিদ খোলা হবে। মসজিদে প্রবেশের আগে মুসল্লিদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করা হবে। স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির পশ্চিমাঞ্চলীয় লাকেমবা মসজিদে ঈদুল ফিতরের সময় সাধারণত শত শত মুসল্লির আগমন ঘটে। করোনার কারণে মুসল্লিদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে মাথায় রেখে এবার মসজিদের পক্ষ থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে ঈদের জামাত ও খুতবা পাঠের আয়োজন করা হয়।