বিক্ষোভবিরোধী আইনের প্রতিবাদে উত্তাল গ্রিস

বিক্ষোভ বন্ধে প্রস্তাবিত কঠোর একটি আইনের প্রতিবাদে গ্রিসের রাজপথে নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রতিবাদ এক পর্যায়ে ব্যাপক সহিংসতায় রূপ নেয়। বৃহস্পতিবারের এ ঘটনায় রাজধানী এথেন্সের সড়কগুলো যেন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।noname
রাজপথে একের পর এক পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীরা। তার আগুন জ্বলছিল দাউ দাউ করে। সেই আগুনের ফাঁক দিয়েই বিক্ষোভকারীদের দিকে তেড়ে যায় পুলিশ। শুরু হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো। বিক্ষোভকারীদের দিকে ফ্ল্যাশ গ্রেনেডও নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী। ধোঁয়ায় ভরে যায় পুরো এলাকা।

প্রস্তাবিত আইনের বিরুদ্ধে এদিন দেশজুড়ে প্রায় ৪০টি শহরে রাজপথে নামে বিক্ষোভকারীরা। শুধুর এথেন্সের কেন্দ্রস্থলেই জড়ো হয়েছিলেন প্রায় ১০ হাজার প্রতিবাদকারী। তাদের অধিকাংশই গ্রিক কমিউনিস্ট পার্টির শ্রম ইউনিয়নের ডাকে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হয়।

কর্মসূচির এক পর্যায়ে কিছু তরুণ বিক্ষোভকারী পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এরপর পুলিশের কাঁদানে গ্যাস শুরু করলে বিশেষ করে বিপাকে পড়ে নারীরা। যারা বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন তারা আরও বেশি করে বিপাকে পড়ে। এ সময় তারা দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করে।

এ বিক্ষোভের ঘটনায় পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। ১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিক্ষোভে কড়াকড়ি বিষয়ে প্রস্তাবিত বিল নিয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক শেষ হয়। পরে ভোটাভুটির সময় ৩০০ সদস্যের পার্লামেন্টে ১৮৭ জন বিলের পক্ষে ভোট দেন। দৃশ্যত নতুন আইন কার্যকর করতে সরকার বদ্ধপরিকর।

পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিটসোটাকিস বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার রক্ষা করা হবে। কিন্তু বিক্ষোভ এমনভাবে দেখাতে হবে যাতে শহরের জীবনযাত্রায় কোনও প্রভাব না পড়ে। রাস্তায় গাড়ি চলাচল বা বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটে; এমন বিক্ষোভ বরদাশত করা হবে না।

গ্রিসে সব শহরের সিটি সেন্টারে মাঝেমধ্যেই ছোটখাট বিক্ষোভ হয়ে থাকে। এসব কর্মসূচি থেকে ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটে থাকে। নতুন আইনের পক্ষাবলম্বনকারীরা বলছেন, এমন পরিস্থিতির অবসান ঘটা উচিত। প্রতিবাদের অধিকার যেমন আছে, তেমনই লোকজনের হাসপাতালে যাওয়ার অধিকারও রয়েছে।

সম্প্রতি ভারতেও উত্তর প্রদেশ সরকার একই রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। দেশটির মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় সরকারি সম্পত্তির যে ক্ষতি হয়েছিল, তার সমপরিমাণ অর্থ বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে আদায়ের জন্য নোটিশ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। এমনকি তখন বেছে বেছে মুসলিমদের মালিকানাধীন বহু দোকানপাট সিলগালা করে দেওয়া হয়, পাঠানো হয় ‘ক্ষতিপূরণ’ আদায়ের নোটিস। তবে গ্রিসের নতুন আইন কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে নয়। সূত্র: ডিডব্লিউ।