দিল্লিতে প্রতি চার জনে একজন করোনায় আক্রান্ত: জরিপ

র‍্যান্ডম নমুনায়নের ভিত্তিতে অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ভারতের রাজধানী দিল্লির প্রতি চার জন বাসিন্দার মধ্যে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্য সরকার পরিচালিত এই জরিপে ২১ হাজার ৩৮৭ জন মানুষের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে এদের ২৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ নমুনায় করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি রয়েছে। এর অর্থ হলো এসব মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন। নতুন এই জরিপের ফলাফলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, শহরটিতে ভাইরাসটির সংক্রমণের ব্যাপকতা ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।সম্প্রতি করোনা শনাক্তের পরীক্ষার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে দিল্লি

ভারতের রাজধানী শহর দিল্লিতে প্রায় এক কোটি ৯৮ লাখ মানুষের বসবাস। এখন পর্যন্ত শহরটির মোট বাসিন্দার এক শতাংশেরও কম বা এক লাখ ২৩ হাজার ৭৪৭ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জরিপ অনুযায়ী ২৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ আক্রান্তের হিসেবে শহরটির প্রায় ৪৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। দিল্লি সরকারের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনাক্ত ও আক্রান্তের সংখ্যার এই পার্থক্য থেকে বোঝা যাচ্ছে বিপুল সংখ্যক মানুষই উপসর্গ ছাড়াই সংক্রমণের শিকার হয়েছেন।

সরকার বলছে, দিল্লির বেশ কিছু জায়গায় তীব্র ঘনবসতি থাকায় সেসব এলাকায় সংক্রমণের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ দশমিক ৪৮ শতাংশের চেয়েও বেশি। শহরের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ এখনও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে জানিয়ে রাজ্য সরকার সব ধরনের নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছে।

ভারতে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপকতা বুঝতে এ ধরনের একটি জরিপ চালানো হলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মাধ্যমে ভাইরাসটির ব্যাপকতা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবে কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষার উপকরণ বিতরণ আরও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার সুযোগ তৈরি হবে এবং সুনির্দিষ্ট এলাকায় সংক্রমণ ঠেকানোর নীতি গ্রহণও সহজ হবে।

করোনাভাইরাস মহামারিতে ভারতের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর অন্যতম দিল্লি। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় জুনের প্রথম দুই সপ্তাহ শহরটিতে হাসপাতাল শয্যার মারাত্মক সংকট দেখা দেয়। তবে তারপরে সেখানে হাসপাতাল অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে আর দৈনিক শনাক্তের সংখ্যাও কমে এসেছে। গত দুই সপ্তাহে শহরটিতে প্রতিদিন এক হাজার দুইশ’ থেকে এক হাজার ছয়শ’ মানুষের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। জুন মাসের শেষ সপ্তাহের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় অর্ধেক।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো, আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা এবং তাদের কার্যকরভাবে আইসোলেশন করার কারণেই দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত কমেছে। এমনকি শহরটিতে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে মানুষের মৃত্যুর হারও কমে এসেছে।