ধর্ম অবমাননায় অভিযুক্তকে আদালতে গুলি করে হত্যা

ধর্ম অবমাননা আইনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে পাকিস্তানের একটি আদালত কক্ষে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (২৯ জুলাই) উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারের এক আদালতে শুনানি চলার মধ্যেই তাহির আহমেদ নাসিমকে হত্যা করা হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তাকে লক্ষ্য করে ছয়টি গুলি চালানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।হত্যাকাণ্ডের পর আদালতের বাইরে নিরাপত্তাকর্মীদের অবস্থান

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননা আইন খুবই কঠোর। ব্লাসফেমি নামের এই আইনে দোষী প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। তা সত্ত্বেও দেশটিতে এই আইনে অভিযুক্তদের প্রায়ই সহিংসতার শিকার হতে হয়। যার সর্বশেষ বলি হলেন তাহির আহমেদ নাসিম।

২০১৮ সালে গ্রেফতারের পর থেকেই পুলিশি হেফাজতে ছিলেন তাহির আহমেদ নাসিম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিজেকে নবী দাবি করে ব্লাসফেমি আইন ভঙ্গ করেছেন তিনি। নাসিমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ব্লাসফেমি আইনের ২৯৫-এ, ২৯৫-বি এবং ২৯৫-সি ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগে বলা হয়, নিজেকে নবী দাবি করে ইসলাম ধর্মের মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননা করেছেন তিনি। আইন অনুযায়ী এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

বুধবার আদালতে ওই মামলার শুনানি চলার মধ্যেই তাহির আহমেদ নাসিমকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ কর্মকর্তা ইজাজ আহমেদ জানান, ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘হত্যাকারী দায় স্বীকার করেছে আর বলেছে, ধর্ম অবমাননা করায় তাকে হত্যা করেছে।’

পাকিস্তানের কঠোর ধর্ম অবমাননা আইনে এখন পর্যন্ত একজন অভিযুক্তও সর্বোচ্চ দণ্ড পায়নি। তবে এসব মামলায় অভিযুক্তদের বিনা বিচারে হত্যা ও তাদের ওপর সংঘবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা গত কয়েক বছরে নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে এই অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অন্তত ৭৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্য, আইনজীবী ও বিচারকেরাও ছিলেন।