সর্বোচ্চ আদালতে শামীমার যুক্তরাজ্যে ফেরার মামলা

বাড়ি থেকে পালিয়ে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাবেক ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগমের যুক্তরাজ্যে ফেরার মামলা এবার সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির শনিবারের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

noname

লন্ডনের আপিল আদালত গত ১৬ জুলাই শামীমার যুক্তরাজ্যে ফেরার পক্ষে রায় দিয়েছিল। রায়ে বলা হয়েছিল, শামিমাকে সুষ্ঠু শুনানি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, কারণ যুক্তরাজ্যে ফিরতে না দিলে সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরে থাকা অবস্থায় তার পক্ষে এই আইনি লড়াই চালানো সম্ভব নয়। ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে আদালতের এই নির্দেশলায় হতাশা প্রকাশ করে জানিয়েছিল, তারা এর বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চাইবে।

ব্রিটিশ সরকার তাদের কথা মতো রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পর মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে। আপিল আদালত এই মামলা জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে কেবল সুপ্রিম কোর্টই এর নিষ্পত্তি করতে পারে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে মামলা সুপ্রিম কোর্টে নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে ব্রিটিশ সরকার। শুক্রবার এ ব্যাপারে সন্তোষ প্রক্শ করেছে সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে শুনানি কখন হবে তা মন্ত্রণালয় জানায়নি।

লন্ডনের বেথনেল গ্রিন অ্যাকাডেমি স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল শামীমা। ২০১৫ সালে আমিরা আবাসে ও খাদিজা সুলতানা নামের আরও দুই কিশোরীকে সঙ্গে নিয়ে আইএসে যোগ দিয়েছিল সে। পরিবারকে একদিনের জন্য বাইরে যাওয়া কথা বলে প্রথমে তুরস্ক যায় তারা। সেখান থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়ায় প্রবেশ করে। এরপর নেদারল্যান্ডস থেকে সিরিয়ায় যাওয়া এক আইএস জঙ্গিকে বিয়ে করেছিল শামীমা। দুইবার গর্ভপাতের পর সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় সে। পরে সেই শিশুরও মৃত্যু হয়। উদ্ধারের পর শামীমা আবারও যুক্তরাজ্যে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাজ্য।

এরপর শামীমা বেগম তার আইনজীবীর মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেছিলেন। তার যুক্তি ছিল, ব্রিটিশ সরকার ‘অবৈধভাবে’ তাকে রাষ্ট্রহীন করেছে এবং তার জীবনকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। জুলাইয়ে ওই আবেদনের রায়েই লন্ডনের আপিল আদালত বলেছিল, “শামীমাকে সুষ্ঠু এবং কার্যকরভাবে আইনি প্রক্রিয়া চালাতে দেওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দেওয়া।”

২০১৯ সালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাফ জানিয়ে দেয়, শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নন। তাকে দেশে প্রবেশ করতে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।