বাহরাইন, ওমানও আমিরাতকে অনুসরণ করবে: ইসরায়েলি মন্ত্রী

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর আরও একাধিক আরব দেশের কাছ থেকে এমন ঘোষণা আসতে পারে। এমনটাই মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কর্মকর্তারা। রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসরায়েলি গোয়েন্দা মন্ত্রী স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, আমিরাতকে অনুসরণ করা পরবর্তী উপসাগরীয় দেশ হতে পারে বাহরাইন ও ওমান।eli-cohen

গোয়েন্দা মন্ত্রী এলি কোহেন বলেন, আমিরাতের সঙ্গে চুক্তির প্রেক্ষিতে আরও অনেক উপসাগরীয় দেশ এবং আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গেও চুক্তি হবে।

এলি কোহেন বলেন, আমি মনে করি, বাহরাইন ও ওমান অবশ্যই এজেন্ডায় রয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত দুই বছরে ওমান ও বাহরাইনের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

এলি কোহেন বলেন, আমার মূল্যায়ন হচ্ছে, আগামী বছর আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গেও শান্তি চুক্তি হবে। এর মধ্যে প্রথম কাতারে থাকবে সুদানের নাম।

হোয়াইট হাউসের তরফেও আরব ও আফ্রিকান দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের আসন্ন চুক্তির ইঙ্গিত মিলেছে।

এদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের চুক্তিকে স্বাগত জানানোয় মিসর, ওমান ও বাহরাইনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই তিন দেশই সৌদি-আমিরাত বলয়ের হিসেবে পরিচিত। তবে রিয়াদের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রকাশ্য বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল ও আমিরাতের মধ্যে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তিতে সমর্থন দেওয়ায় আমি মিসরের প্রেসিডেন্ট আল সিসি এবং ওমান ও বাহরাইনের সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। এই চুক্তি ‘শান্তির পরিসরকে’ আরও ব্যাপক করে তুলেছে। পুরো অঞ্চলের জন্যই এটি ইতিবাচক।

ইসরায়েলের সঙ্গে এর আগে কেবল মাত্র দুটি আরব রাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক হয়েছে। প্রথমটি মিসরের সঙ্গে ১৯৭৯ সালে। এই চুক্তি করার পরিণামে মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতকে প্রাণ দিতে হয়েছে। দ্বিতীয়টি জর্ডানের সঙ্গে ১৯৯৪ সালে।

১৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার যেভাবে ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ঘোষণাটি এসেছিল, তা সবাইকে হতচকিত করেছে। এতে মধ্যস্থতা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনিই প্রথম এক বিবৃতিতে এই ঘটনা জানান। পুরো আলোচনাটি চলছিল বেশ গোপনে। এতটাই গোপনে যে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যন্ত নাকি এ বিষয়ে কিছু জানতেন না।

ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদের মধ্যে এই চুক্তিকে এক 'ঐতিহাসিক মূহুর্ত' বলে বর্ণনা করেছেন।

ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ইসরায়েল ঘেঁষা পরিচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘বরফ যেহেতু গলেছে এখন আমি আশা করবো আরও অনেক আরব এবং মুসলিম দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতকে অনুসরণ করবে।’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ঘোষণা দেওয়ার পরপরই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হিব্রুতে টুইট করেন, ‘এক ঐতিহাসিক দিন‍।’ সূত্র: আল জাজিরা।