ভূমধ্যসাগর পরিস্থিতি নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে আলোচনা যুক্তরাষ্ট্রের

পূর্ব ভূমধ্যসাগর পরিস্থিতি নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে আলোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, সোমবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় পূর্ব ভূমধ্যসাগর পরিস্থিতি ছাড়াও তার্কিশ রিপাবলিক অব নর্দার্ন সাইপ্রাস (টিআরএনসি) নিয়েও কথা হয় দুই নেতার।

তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর এ ফোনালাপের কদিন আগেই গ্রিক সাইপ্রিয়টের ওপর থেকে মার্কিন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।

ওয়াশিংটনের ওই পদক্ষেপের নিন্দা জানায় তুরস্ক। আঙ্কারা বলছে, এতে করে এ অঞ্চলে উত্তেজনার পারদ আরও বেড়ে যাবে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পূর্ব ভূমধ্যসাগর থেকে তুরস্কের সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়।

এদিকে তুরস্কের সঙ্গে বিবাদের মধ্যেই সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে গ্রিস। দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিস জানিয়েছেন, তার দেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করবে। এরমধ্যে ফ্রান্সের তৈরি ১৮টি রাফাল যুদ্ধবিমান, চারটি ফ্রিগেট এবং চারটি নেভি হেলিকপ্টারও রয়েছে।

এছাড়া আগামী বছরে সশস্ত্র বাহিনীর আকার আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে গ্রিস। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ সময়ের মধ্যে বাহিনীতে ১৫ হাজার নতুন জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।

তুরস্ক সীমান্তে সামরিক উপস্থিতিও জোরদার করেছে গ্রিস। মূলত তুরস্ক থেকে ইউরোপমুখী অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। কেননা, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আঙ্কারা ইউরোপমুখী অভিবাসীদের ঢল না থামালে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

আগামী ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইউরোপীয় কাউন্সিলের বৈঠকের শীর্ষ এজেন্ডায় রয়েছে তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যকার বিবাদের বিষয়টি। ফ্রান্স ও গ্রিসের মতো দেশগুলো তুরস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সংস্থাটির ওপর চাপ প্রয়োগ করছে।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের অশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে গ্রিস ও সাইপ্রাস আপত্তি তুললে এ উত্তেজনা তৈরি হয়। এটি ক্রমেই আরও জটিল আকার ধারণ করছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘গ্রিস হয় রাজনীতি ও কূটনীতির ভাষা বুঝবে, না হয় তাদের বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হবে। তুরস্কের জনগণ যেকোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’ সূত্র: ডেইলি সাবাহ, বিবিসি।