রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ভারতের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা

ভারতের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে দেশটির কৃষকেরা। মৌসুমি বৃষ্টিপাতে ক্ষয়ক্ষতির পর পেঁয়াজ উৎপাদনকারী অঞ্চল মধ্য প্রদেশ, গুজরাট, কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রের কৃষকেরা যখন ভালো মূল্য পেতে শুরু করেছেন; তখনই রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত আসে। সর্বভারতীয় কৃষাণ সভার পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এদিকে মহারাষ্ট্র রাজ্যের জোট সরকারের অন্যতম অংশীদার শারদ পাওয়ার টুইট বার্তায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে পাকিস্তানের মতো দেশগুলো লাভবান হবে। সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।মাসখানেকের ব্যবধানে ভারতের খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে

গত মার্চ মাসে ভারতে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫ রুপিতে। সম্প্রতি দেশটির সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের বাজার মহারাষ্ট্রের লাসালগাঁওয়ে সেই মূল্য দ্বিগুণ বেড়ে ৩০ রুপি ছাড়িয়ে গেছে। এরপরই সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আকস্মিকভাবে দেশটির কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পণ্যটি রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের জেরে বাংলাদেশের বাজারেও বেড়ে গেছে পণ্যটির দাম।

সর্বভারতীয় কৃষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক ড. অজিত নাভালে বলেছেন, এই নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কেবল মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ উৎপাদকদের জন্য প্রতারণামূলক নয়; বরং সারা ভারতের কৃষকদের সঙ্গেই তা করা হয়েছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘কৃষকেরা এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে আর রাস্তায় বেরিয়ে বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, বিহারের আসন্ন নির্বাচনে পুনর্নির্বাচিত হতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার দাবি, পেঁয়াজের দাম বাড়লে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দলের ভোটে টান পড়ার আশঙ্কা ছিল।

ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) প্রেসিডেন্ট শারদ জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পিযুষ গয়ালের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘এই নিষিদ্ধের কারণে উপসাগরীয় বিভিন্ন দেশসহ শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারে ভারতের রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

আরেক টুইট বার্তায় শারদ পাওয়ার বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার আকস্মিকভাবে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী অঞ্চলে এই সিদ্ধান্তের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে আর গত রাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানোর অনুরোধ করে।... আমি পিযুষ গয়ালকে পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি।’

ধারণা করা হচ্ছে, আগামী নভেম্বরে নতুন পেঁয়াজ বাজারে না ওঠা পর্যন্ত এর সরবরাহ স্বাভাবিক হবে না।