জলবায়ুর সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানলের সংযোগ স্পষ্ট: গবেষণা

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় সাম্প্রতিক ভয়াবহ দাবানলের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের স্পষ্ট সংযোগ দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আগুন ধরে যাওয়ার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক উষ্ণতাই ‘পরিষ্কার এবং বিস্তৃত’ ভূমিকা রেখেছে। তারা বলছেন, মানুষ জলবায়ু বদলে দেওয়া শুরুর পর থেকে এখন সবচেয়ে বেশি আগুনের ঝুঁকির মুখে রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া। নতুন এই গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়ার অধ্যাপক ড. ম্যাথিউ জোনস। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।noname

গত আগস্ট মাস থেকে বিগত ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল প্রত্যক্ষ করছে ক্যালিফোর্নিয়া। এতে ৩০ জনের প্রাণহানির পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। দাবানলের কারণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দোষারোপের খেলা। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউসোম এজন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই যুক্তি খারিজ করে দিয়ে বলছেন দাবানলের জন্য দায়ী মূলত প্রচলিত ভূমি ব্যবস্থাপনা।

তবে বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভূমি ব্যবস্থাপনার চর্চা নয় দাবানলের নেপথ্যে বড় ভূমিকা রেখেছে তাপমাত্রা বৃদ্ধি। গবেষণায় দেখা গেছে, আগুনের তীব্রতা এবং বিস্তৃতির বাড়ার নেপথ্যে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। উচ্চ তাপমাত্রা, কম আদ্রতা, কম বৃষ্টিপাত এবং জোরালো বাতাসের সমন্বয়ে আগুন বাড়ার ঝুঁকি তীব্র হয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

নতুন এই গবেষণাটিতে ২০১৩ সাল থেকে প্রকাশিত একশ’রও বেশি গবেষণা কর্ম পর্যালোচনা করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ক্রমবর্ধমান উষ্ণতা এবং শুষ্ক পরিস্থিতি তখনই বাড়তে থাকে যখন জলবায়ু সংক্রান্ত প্রাকৃতিক উপাদানগুলো যখন মানুষের ভূমিকার কারণে বাড়তে থাকে।

গবেষণা কর্মটির নেতৃত্ব দেওয়া ড. ম্যাথিউ জোনস জানান, গত চার দশকে দাবানলের ঘটনা আট থেকে দশগুণ বেড়েছে। এই প্রবণতা বাড়িয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের চূড়ান্ত অর্থ হলো বনাঞ্চলগুলো যে অঙ্গরাজ্যেরই হোক না কেন সেগুলো ক্রমাগতভাবেআরও বেশি উষ্ণ এবং শুষ্ক হয়ে উঠেছে। আর আজ আমরা যে মাত্রায় আগুনের প্রভাব ও বিস্তার দেখতে পাচ্ছি তা সত্যিকার অর্থে সেই প্রবণতার ফল।’