কৃষি আইন রুখে দেওয়ার আহ্বান সোনিয়া গান্ধীর

ব্যাপক কৃষক বিক্ষোভের মুখে পড়া ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার প্রণীত কৃষি আইন রুখে দিতে নতুন আইন প্রণয়ণের কথা বিবেচনা করতে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলোকে পরামর্শ দিয়েছেন দলটির সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশটির প্রধান বিরোধী দলটির তরফে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান তিনি। ভারতীয় সংবিধানের সুনির্দিষ্ট একটি ধারা ব্যবহার করে এই ধরণের আইন প্রণয়নের সুযোগ রয়েছে বিধানসভাগুলোর। এর আগে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রণীত ভূমি অধিগ্রহণ আইনের ক্ষেত্রে ২০১৫ সালে একই পথ অনুসরণ করতে রাজ্য সরকারগুলোকে পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী

রাজ্যসভা ও রাজপথে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং বিতর্ক সত্ত্বেও সম্প্রতি কৃষি সংক্রান্ত তিনটি আইন প্রণয়ণ করেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার। পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে ইতোমধ্যে এগুলো আইনে পরিণত হয়েছে। তবে এসব আইনের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ এখনও চলছে। বিক্ষোভের অন্যতম কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে কংগ্রেস শাসিত রাজ্য পাঞ্জাব। ইতোমধ্যে রাজ্যটির গুরুত্বপূর্ণ মিত্র আকালি দলের সমর্থন হারিয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি। আর কৃষকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সোমবারও ধর্নায় বসেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা অমরেন্দ্র সিং।

এমন প্রেক্ষাপটে সোমবার কংগ্রেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মাননীয় প্রেসিডেন্ট (সোনিয়া গান্ধী) কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিকে সংবিধানের ২৫৪(২) ধারা অনুযায়ী নতুন কৃষি আইন প্রণয়ণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে বলেছেন যাতে সংবিধানের আওতায় থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রণীত কৃষি বিরোধী আইন রাজ্য সরকারগুলো এড়িয়ে চলতে পারে।’ ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এর মাধ্যমে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলো দানবীয় তিন কৃষি আইনের সর্বনিম্ন সমর্থন মূল্য বিলোপসহ কৃষকবিরোধী অগ্রহণযোগ্য ধারাগুলো এড়িয়ে যেতে পারবে। এছাড়াও এই পদক্ষেপের ফলে মোদি সরকার ও বিজেপি কৃষকদের সঙ্গে যে অন্যায় করেছে তারও প্রশমন হবে।’

সোনিয়া গান্ধী যে সাংবিধানিক ধারার কথা উল্লেখ করেছেন সেই ধারা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় আইনকে খারিজ করে দিতে রাজ্য বিধানসভা আইন পাশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে বিধানসভার অনুমোদনের পর নতুন ওই আইন কার্যকর হওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির সম্মতি পেতে হবে।
কংগ্রেস প্রেসিডেন্টের বিবৃতির আগে গত রবিবারই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিতর্কিত তিনটি আইন থেকে কৃষকদের সুরক্ষার প্রয়োজনে বিধানসভায় নতুন সংস্কার আনার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে তার সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার যা করেছে তা দেশবিরোধী বলেও আখ্যা দেন তিনি।