ব্রাজিলের ম্যানগ্রোভ সুরক্ষা নীতি প্রত্যাহার, পরিবেশবাদীদের ক্ষোভ

ক্রান্তীয় ম্যানগ্রোভ এবং অন্যান্য উপকূলীয় বাস্তুসংস্থানের সুরক্ষা দিয়ে আসা একটি নীতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর নেতৃত্বাধীন সরকার। পরিবেশবাদী গ্রুপগুলো এই পদক্ষেপকে অপরাধ আখ্যা দিয়েছেন। তারা বলছেন, সরকারি পদক্ষেপের কারণে ডেভেলপার কোম্পানিগুলো পর্যটনের জন্য প্রাকৃতিক আবাস উজাড়ের সুযোগ পাবে আর এতে এক সময় সেগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ একটি সুরক্ষা ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।noname

উগ্র ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বেশ কয়েকটি পরিবেশগত সংকটের মুখে পড়েছে ব্রাজিল। বনাঞ্চলে অবৈধ কর্মকাণ্ডকে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে দেশটিতে বনাঞ্চল উজাড় বৃদ্ধিসহ দাবানলের ঘটনাও বেড়েছে। বলসোনারোর পরিবেশ নীতি নিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক সতর্কতা জানিয়েছে পরিবেশবাদীরা।

দুনিয়ার ফুসফুস খ্যাত আমাজন বনাঞ্চলের বড় অংশ রয়েছে ব্রাজিলে। দেশটিতে বহু ক্রান্তীয় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল এবং উপকূলীয় বালুকাময় সৈকতের বনভূমি রয়েছে। ম্যানগ্রোভ ও সৈকতের বনভূমির সুরক্ষায় ২০০২ সালে ‘স্থায়ী সুরক্ষিত এলাকা’ গড়ে তোলে ব্রাজিল। তবে বিতর্কিত পরিবেশ মন্ত্রী রিকার্ডো স্যালেসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পরিবেশগত কাউন্সিল ‘স্থায়ী সুরক্ষিত এলাকা’ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

পরিবেশবাদী গ্রুপগুলো বলছে ব্রাজিল সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে ডেভেলপাররা ম্যানগ্রোভ ও সৈকতের বনভূমি উজাড়ের সুযোগ পাবে। পরিবেশবাদী গ্রুপ এসওএস মাতা আটলান্টিকার প্রধান মারিও মান্তোভানি বলেন, ‘এসব অঞ্চল ইতোমধ্যে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্টের প্রচন্ড চাপের মুখে রয়েছে।’ তবে ২০০২ সালের ওই নীতি অন্তত সেগুলোকে আরও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করছিলো বলে জানান তিনি। এই নীতি প্রত্যাহারকে তিনি ‘সমাজের বিরুদ্ধে অপরাধ’ আখ্যা দেন।

উল্লেখ্য, অ্যামাজনের রেইনফরেস্ট এর এক একর পরিমাণ বনাঞ্চল যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে ম্যানগ্রোভের এক একরও সেই একই পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন ব্রাজিলের পরিবেশমন্ত্রী রিকার্ডো স্যালেস। গত এপ্রিলে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে তার কথোপকথন ফাঁস হয়ে যায়। সেখানে স্যালেস বলেন, পরিবেশগত নীতিগুলো এগিয়ে নেওয়ার জন্য করোনাভাইরাসের মহামারিকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ তার মতে এই সময়ে সংবাদমাধ্যমগুলো শুধু কোভিড নিয়েই আলোচনা করছে।

স্যালেসের নতুন পদক্ষেপের বিষয়ে এক বিবৃতিতে পরিবেশবাদী গ্রুপ গ্রিনপিস বলেছে, ‘ব্রাজিলে আমরা রেকর্ড পরিমাণ পরিবেশগত বিপর্যয় এবং দাবানল প্রত্যক্ষ করলেও স্যালেস তার সময়গুলো আরও ধ্বংস উস্কে দেওয়ার কাজে বিনিয়োগ করছে।’