থাইল্যান্ডে কারাদণ্ডের ঝুঁকিতে মার্কিন নাগরিক

থাইল্যান্ডের একটি হোটেল সম্পর্কে নেতিবাচক রিভিউ দিয়ে কারাদণ্ডের ঝুঁকির মুখে পড়েছেন এক মার্কিন নাগরিক। ওয়েসলি বার্নেস নামের ওই মার্কিনির বিরুদ্ধে থাইল্যান্ডের কঠোর মানহানি প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে জামিনে মুক্তি পেলেও অভিযোগ প্রমাণিত হলে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে তার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।থাইল্যান্ডের দ্য সী ভিউ রিসোর্ট

ঘটনার শুরু হয়, এ বছরের শুরুতে থাইল্যান্ডের কোহ চ্যাং দ্বীপের দ্য সী ভিউ রিসোর্টে। ওই রিসোর্টে অবস্থান করতে যান থাইল্যান্ডে কর্মরত মার্কিন নাগরিক ওয়েসলি বার্নেস। সেখানকার রেস্টুরেন্টে নিজেই অ্যালকোহল বোতল বহন করতে চাইলে বাধার মুখে পড়েন। হোটেল কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বার্নেস বোতল সরবরাহের ফি দিতে অস্বীকার করলে শোরগোল তৈরি হয়। পরে হোটেল ব্যবস্থাপক হস্তক্ষেপ করে তার ফি ছাড় দেওয়া হয়।

তারপর থেকেই বেশ কয়েকটি প্লাটফর্মে হোটেলটি সম্পর্কে নেতিবাচক রিভিউ পোস্ট করেন ওয়েসলি বার্নেস। এর জেরে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে হোটেল কর্তৃপক্ষ। ওই মামলায় আটক হয়ে দুই রাত কারাগারে কাটান তিনি। পরে জামিনে মুক্তি পান।

হোটেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ট্রিপঅ্যাডভাইজার নামের একটি ওয়েবসাইটে পোস্ট করা একটি রিভিউতে বার্নেস হোটেলটিকে ‘আধুনিক যুগের দাসত্বে’ যুক্ত থাকায় অভিযুক্ত করেন। এছাড়া আরও বেশ কিছু প্লাটফর্মে নেতিবাচক রিভিউ দেন তিনি। তবে এসব রিভিউ বানোয়াট এবং বিদ্বেষপরায়ণ বলে দাবি করে হোটেল কর্তৃপক্ষ।

তবে মার্কিন নাগরিক ওয়েসলি বার্নেস দাবি করেন, ট্রিপঅ্যাডভাইজার’র গাইডলাইন লঙ্ঘিত হওয়ায় সুনির্দিষ্ট ওই রিভিউটি কখনোই সেখানে প্রকাশ হয়নি। ওই ঘটনার পর নিজের চাকরি হারিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। এছাড়া মামলাটি এতো বেশি নিয়ে প্রচারণা চলছে যে তার জন্য নতুন চাকরি পাওয়াও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

আগামী অক্টোবরের শুরুতে মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কারাগারে যাওয়া নিয়ে নিজের ভীতির কথা জানিয়ে বার্নেস বলেন, প্রথম যে কয়েক দিন আটক থাকতে হয়েছে তা ছিলো ভয়ানক। সরাসরি হোটেলের সঙ্গে মামলাটি নিষ্পত্তি করার বিষয়ে এখনও আশাবাদী তিনি।

তবে হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, মামলা দায়েরের আগে তারা বারবার বার্নেসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। তারা বলছেন, ‘গ্রহণযোগ্য পন্থায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তার সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে গেছেন। পরে আমরা তাকে নিবৃত্ত করতে মামলা দায়ের করি। আমাদের অভিযোগের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ তাকে জানানোর পরই শুধু তিনি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’

হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, বার্নেসের রিভিউ প্রকাশের পর তারা রিজার্ভেশন বাতিল হয়ে যাওয়া ছাড়াও কর্মীদের সঙ্গে আচরণ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, মিথ্যা রিভিউ লেখা বন্ধ করা থামাতে বার্নেসকে বেশ কয়েক বারই অনুরোধ জানানো হয়। তবে তাতে সাড়া দেননি তিনি।

উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস মহামারিতে মারাত্মক মন্দার মুখে পড়েছে থাইল্যান্ডের পর্যটন শিল্প।