বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ৪০ শতাংশ উদ্ভিদ প্রজাতি: গবেষণা প্রতিবেদন

বিশ্বের প্রতি পাঁচটি উদ্ভিদ প্রজাতির মধ্যে দুইটিই বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এমনকি আবিষ্কার হওয়ার আগেই হারিয়ে যাচ্ছে অনেক উপকারি প্রজাতি। প্রকৃতি ধ্বংসের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের রয়্যাল বোটানিক্যাল গার্ডেনস, কেউয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

উদ্ভিদ ও ছত্রাক পৃথিবীর জীবন টিকিয়ে রাখে। পৃথিবীতে এমন অনেক উদ্ভিদ প্রজাতি আছে যা এখনও বিজ্ঞানীরা শনাক্ত করতে পারেননি। এর কোনোটি হয়তো মানুষের খাদ্য জোগাতে পারতো, কোনোটি হয়তো ওষুধ আবার কোনোটি হয়তো জৈব জ্বালানি সরবরাহ করতে পারতো। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমন অনেক উপকারি উদ্ভিদ প্রজাতি শনাক্ত হওয়ার আগেই হারিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি সপ্তাহে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে আক্ষেপ করে বলা হয়, জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখার জন্য গত এক দশকে ন্যুনতম লক্ষ্যমাত্রাটুকুও পূরণ করতে পারেনি বিশ্বের দেশগুলো।

রয়েল বোটানিক্যার গার্ডেনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বর্তমানে উদ্ভিদ বিলুপ্তির হার পূর্বানুমানের চেয়েও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। ২০১৬ সালে ২১ শতাংশ উদ্ভিদ বিলুপ্তির হুমকিতে ছিল। এখন প্রায় ৪০ শতাংশ বা দুই পঞ্চমাংশ উদ্ভিদ প্রজাতি বিলুপ্তির হুমকিতে আছে।

কেউয়ের ডিরেক্টর অব সায়েন্স  আলেক্সান্দ্রে আন্তোনেলি বলেন, ‘উদ্ভিদ প্রজাতি হারানোর মানে হলো, মানুষের জন্য একটি সুযোগ হারানো। এটা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারছি না। কারণ, অনেক প্রজাতি আবিষ্কার করে নাম দেওয়ার আগেই তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।’

২০১৯ সালে ৪ হাজারেরও বেশি উদ্ভিদ ও ছত্রাক আবিষ্কার হয়। এর মধ্যে রয়েছে ইউরোপ ও চীনে আবিষ্কৃত ছয় প্রজাতির এলিয়াম, ক্যালিফোর্নিয়াতে আবিষ্কৃত ১০ প্রজাতির পালং শাক এবং কাসাভার দুইটি বন্য প্রজাতি। এগুলো সবই মানুষের প্রধান খাদ্য চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারে। নতুন আবিষ্কৃত ঔষধি উদ্ভিদের মধ্যে আছে, টেক্সাসে পাওয়া সী হোলি প্রজাতি, যা প্রদাহের চিকিৎসায় কাজে লাগে। তিব্বতে আবিষ্কার হয়েছে ম্যালেরিয়াবিরোধী প্রজাতি আর্টেমিসা।

আন্তোনেলি বলেন, ‘উদ্ভিদ ও ছত্রাক ছাড়া আমরা টিকতে পারতাম না। তাদের উপরই সব জীবন নির্ভর করছে।’

৪২টি দেশের ২১০ জন বিজ্ঞানী সম্মিলিতভাবে কেউ-এর প্রতিবেদনটি তৈরিতে ভূমিকা রেখেছেন।